পুলিশের হাতে আটক আহসান হাবিব পিয়ার নামের এক নূরানি চেহারার ধার্মিক মুসলমান যুবকের শত নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও উদ্ধারের সংবাদ এবং টাকা লেনদেনের সংবাদে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে আমার কোনও কথা নেই। কারণ এই নারীরা সবাই প্রাপ্ত বয়স্ক। সবাই নূরানি চেহারার আকর্ষণে তার কাছে স্বেচ্ছায় গিয়েছিলো। সে কাউকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিলো এমন কথা সংবাদ বা পুলিশের ভাষ্যে পাওয়া যায়নি। আমি ভাবছি টাকা লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে। বিশাল বিশাল অংকের টাকা তাকে নারীরা দিয়েছে, সাথে তন, মনও দিয়েছে। এইসব তন মন ধনে (ধন>টাকা) সমৃদ্ধ নারীরা আমাকে সত্যি অভিভূত করছে। ভাবতে ভালো লাগছে আমাদের দেশের নারীদের আর্থিক সচ্ছলতা দেখে।
গতকালই এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো -ইউরোপ আমেরিকায় নারীবাদ স্টাব্লিশড একটা টার্ম। সেখানে প্রতিটি নারীই অর্জন করেছে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। তাই শারীরিকভাবেও তারা মুক্ত। নূরানি চেহারার প্লেবয় আহসান হাবিব পিয়ারকে ধনী বানিয়ে দেয়া এইসব ধনবান নারীদের অর্থের উৎস নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করছে না যদিও। আমাদের সাংবাদিকরাও আজকাল কোথায় আর কেঁচো খুড়তে আগ্রহী? সাংবাদিক তো সাংবাদিক, সাপকে কে না ডরায়? তাই সবাই বেচারা মুসলমান যুবকের নূরানি চেহারার বয়ানেই ব্যস্ত। সব ইসলাম বিদ্বেষী সাংবাদিক।
ওদিকে তার ধনবান নারীদের কারণে দেশের নারীবাদীরা যে ইউরোপ আমেরিকার নারীবাদীদের মতো বেকার হতে চলল। সেদিকে আলোকপাত করছে না কেউ। পিয়ারের নারীরা নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামকেও অনেকটাই স্টাব্লিশড করে দিয়েছে। বাংলাদেশের নারীবাদীরাও গিয়ে এখন চাকরি খুঁজুক। ততক্ষণে আমরা একটু কেঁচো খোঁড়াখুঁড়ি করে আসি।
বাংলাদেশের একজন একজন কর্মজীবী নারী জানে তার অর্জিত প্রতিটি পয়সা জ্যামে শ্রমে ঘামে মাখামাখি। আঙুলের পাঁকে পাঁকে গোনাগুনতির সেই পয়সা। যে নারী উপার্জন করে, শুনেছেন কখনও সেই নারীকে জিনে আছর করেছে? শুনেছেন কখনও একজন কর্মজীবী নারী তার সেই ঘামে ভেজা পয়সা তুলে দিয়েছে কোনও ভণ্ড পীর ফকিরের হাতে? আমি অন্তত শুনিনি।
আমাদের সমাজে আছে এক অদ্ভুত পেশাজীবী শ্রেণি। তাদের পেশার নাম বড়লোকের বেকার বৌ। কষ্ট করে ভিড় ঠেলে জ্যাম ঠেলে তাদের দেখার জন্য আপনাকে চিড়িয়াখানায় যেতে হবে না। দৃষ্টি প্রসারিত করুন আপনার চারপাশে। আপনার চারপাশেই তাদের বাস। খুব আড়ম্বর করে যদি তাদের দেখতে চান তো চলে যান দেশের কোনও অভিজাত স্কুলের সামনে, পাইকারি দেখতে পাবেন। আমাকে তেড়ে মারতে না এসে খুব ঠাণ্ডা মাথায় একবার ভেবে দেখবেন প্লিজ।
কোনও নারীকে গালি দিতে হলে চট করে আমরা বলে ফেলি বেশ্যা বা পতিতা। অথচ এটি একটি স্বীকৃত পেশা। একজন বেশ্যা বা পতিতা কারও পকেট কাটছে না। কারো মাথায় বাড়ি দিচ্ছে না। ফাইল আটকে ঘুষ খাচ্ছে না, দুর্নীতি করছে না। বরং রাষ্ট্র অনুমোদিত এলাকায় রাষ্ট্রেরই অনুমোদন সাপেক্ষে টাকার বিনিময়ে সে নিজের শরীর তুলে দিচ্ছে তার ক্লায়েন্টের কাছে। তারপরও কি কারণে সমাজ তাকে অস্পৃশ্য বলে আমার মাথায় আসে না।
অন্যদিকে তাকান- বিবাহ নামক সমাজ রাষ্ট্র অনুমোদিত কাবিন নামের একটা কাগজ বাগিয়ে, কেউ কেউ আবার উচ্চতর শিক্ষার সার্টিফিকেট লকারবন্দি করে রেখে বনে যাচ্ছে দিব্যি গ্লানিমাখা পেশাজীবী বড়লোকের বেকার বৌ। বড়লোকের বাঁধা শয্যাসঙ্গী। বড় লোকটি হয়তো ফাইল আটকিয়ে ঘুষখোর, নয়তো কোনও দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা, অথবা নীতিহীন, আদর্শহীন রাজনৈতিক নেতা। বড়লোক থেকে বড়লোক হওয়ার নেশায় হয়তো সব সময় মনেও করতে পারেন না কাগজ করে পাওয়া বৌটির কথা।
অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকাই তখন রক্ষা করে সম্পর্কের সেতু। শপিং, পার্লার, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, কোনও কিছুই আর তাদের বেকার বৌদের জিনের আছর থেকে রক্ষা করতে পারে না। তাদের জীবনে ভায়া জিন হয়ে শুভাগমন ঘটে আহসান হাবিব পিয়ারের মতো নূরানি চেহারার প্লেবয়ের। জিন সূত্রে এই নূরানি প্লেবয়রা নিজেকে বড়লোকের অবৈধ টাকার উত্তরাধিকারী মনে করে।
এই লেখা পড়ার পর হয়তো অনেকেই, ‘নারীই নারীর শত্রু’ তত্ত্ব হাজির করে আমাকে বারো হাত নেওয়ার জন্য হৈ চৈ করে উঠতে পারেন। তা স্বত্বেও আমি মনে করি তাদের অবৈধ ব্যাংক তথা বড়লোকের বেকার বৌরাও নারীমুক্তির পথে অন্যতম অন্তরায় হিসেবে ক্রিয়াশীল।
আহসান হাবিব পিয়ারদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই অন্তরায়টিও সনাক্ত হওয়া জরুরি
1 comment
ধর্মীয় লেবাস কাজে বাংলাদেশে যত প্রতারক আছে তার মধ্যে এই হারামি সবচেয়ে জঘণ্য