মূলত কি থেমে যায়? থেমে আছে কি তারা? আমি তাদের নিয়ে ভাবছি।মালালা ইউছুফ জাইকে মনে আছে তো? সেই ছোট মেয়েটা যে কিনা পাকিস্তানের মেয়েদের শিক্ষার অধিকারে সোচ্চার হওয়ার জন্য উগ্রপন্থী তালেবানদের বুলেটের শিকার হয়েছিল।
অথবা তামীম কে মনে পড়ে? ফিলিস্তিনের জোয়ান আর্ক যে কিনা ইসরাইলি সৈন্যেদের সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সময় সপাটে চড় বসিয়েছিলো এক ইসরাইলি সৈন্যের গালে।
এবার বলি রাহাফ মোহাম্মদের কথা।যে মেয়েটা সৌদি আরবের মতো জায়গায় জন্ম গ্রহণ করে শুধু মাত্র নিজের জন্য ,নিজের অধিকার জন্য পালিয়ে এসেছে অন্য রাষ্ট্রে। অথচ যে কিনা একবার শুধু মাত্র ছোট করে চুল কাটার অপরাধে ছয়মাস গৃহবন্ধী ছিলো এবং তার ভাই তাকে প্রতিদিন রক্তাক্ত না হওয়া পযন্ত আঘাত করে যেত । এতোটা যন্ত্রনা সহ্য করে ও সে শুধুমাত্র নিজের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছে
এতোক্ষণ যাদের কথা লিখলাম তারা বতমানে নারী স্বাধীনতার আইকন, নিজেদের বা পুরো জাতির জন্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং নিঃসন্দেহ নারীবাদী। কিন্ত আমাদের সমাজ তাদের কে বলে কি দরকার নারীদের বাহীরে যাওয়া। নারী হলো পুরুষে ফটেকমাত্ত। নারী হলো গুরুত্ব হীন জীবন, দিন রাতের কঠোর পরিশ্রম , অন্যায় অবিচারে শিকার হয়ে ,একঘেয়ে ঘরের কাজ কম এবং যন্ত্রাবিদ্ব সন্তান প্রসবের মতো কাজগুলোতে যখন হাঁপিয়ে উঠে ও প্রতিবাদ করে, তখন কি তাকে আপনারা সংসার বিদ্বেষী বা উচ্ছৃঙ্খল নারী বলবেন?
নিজের ইচ্ছা বা নিজের শরীর কে নিয়ে কারো ব্যাত্তিগত খোরাক না হওয়া নারী গুলোই মনে হয় আমাদের সমাজের জন্য একটু বেশী বেশী, যা ইচ্ছে তা।
আমাদের সমাজে কিছু ধমীয় উগ্রবাদী চিন্তার মৌলবাদীরা বলে নারীরা বেশী ঘরের বাহিরে যাওয়ার দরকার নেই।নারী বাহিরে গেলে খারাপ হয়ে যাবে আবার অন্যদিকে তাদের অনেকেই অনৈতিক কাজের জন্য নারীকে ব্যবহার করে কারন তাদের অনৈতিক কাজগুলোতে নারীকে বোরকা পরিয়ে ভিতরে অস্ত্র , ইয়াবা মাদক পাচার করে।
অনেক নারী যখন স্বামীর উপর নির্ভরশীল হতে চায় না, সে তার স্বকীয়তা নিয়ে বাঁচতে চায়, মাথা তুলে দাড়াতে চায়, আর তখনি সেই নারী অনেকের কাছে হয়ে উঠে জাহান্নামী।
কয়েক হাজার মানুষের সেই মাহফিলে আহমদ শফী মেয়েদের চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা না করানোর জন্য উপস্থিত মানুষদের কাছে ‘ওয়াদা’ বা প্রতিশ্রুতি চান।এখানে তিনি বলেন, ক্লাশ ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়া দরকার, কারণ বিয়ে দিলে স্বামীর টাকা পয়সা হিসেব করতে হবে, তাকে চিঠি লিখতে হবে।
লক্ষ্য করুন এই কথাটি কিন্তু নতুন নয়। ছোট বেলায় অনেক শুনেছি। তাহলে আহমদ শফী আবার এই কথা প্রচার আবার কেন করছেন? একটু খেয়াল করলে দেখবেন তার মাহফিলের বেশীর ভাগ শ্রোতাই তরুন প্রজন্ম। তাদের মস্তিকে এই তত্ব ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে নারীকে অবলা ভাবে। স্বামীর যৌন চাহিদা মেটানো, রান্নাবান্না শিশু পরিচর্যা ও ঘরদোর সামলানোই জন্য নারীর জন্ম। এভাবে আলাদা করে দেওয়া হয় নারী আর পুরুষকে ।
মোটকথা, একজন পূর্নাঙ্গ মানুষ হতে যা প্রয়োজন সব আছে, তবু এই সব মৌলবাদীরা নারীকে পূর্নাঙ্গ মানুষ নয় দূর্বল প্রকৃতির মানুষ ভাবতেই ভালবাসে। কেন ?
উত্তর নেই কারো কাছে। কখনো উত্তর চাইলে নষ্ঠা, চরিত্রহীন, পতিতাসহ নানান রকম অশ্লীল কথা বলতে দ্বিধা করে না।
আবার হাস্যকর হলেও এই আহমদ শফীরা হাসপাতালে গিয়ে তার বোন ,মা,বৌ এবং মেয়ের জন্য মহিলা ডাত্তার খোঁজে । আমার প্রশ্ন হলো নারী যদি ৪/৫ ক্লাস পযন্ত পরে তাহলে কিভাবে চিকিৎসা দিবে?
অবলা’ বলে অমর্যাদার দিন ফুরিয়েছে। বাঙালী নারী হিমালয়ের চূড়াতেও উঠেছে। বাঙালী নারী মাথা উঁচিয়েই থাকবে”-