সৌদি আরব, কুয়েত, জর্দানসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের শীর্ষ ওলামা ও ইসলামিক স্কলারগণ মসজিদে গিয়ে নামায আদায়ের ব্যাপারে ফাতাওয়া জারি করেছেন, ফলে এই সিদ্ধান্ত বা ফাতাওয়ার উপর ভিত্তি করে সেসব দেশে সাময়িকভাবে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও জুমার নামায আদায়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ও জনসাধারনের জন্য মসজিদে নামাজ বন্ধ করলে ও ভেতরের বড় বাসায় কিংবা বাসার ছাদে জামাতের মাধ্যমে নামাজ আদায় করছে।
এসব তো গেলো খবরের কথা, এদেরকে কি চেতনাবাজ আবেগী ইসলামিষ্ট বলা যায় কি না জানি না। কারণ এরা সস্তা আবেগের তবলা বাজিয়ে সরলমনা মানুষদের বিভ্রান্ত করছে। ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভালো জানাশোনা ও দূর্যোগকালীন মূহুর্তে ইসলামের করণীয় নির্দেশনা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকলে এভাবে হাস্যকর ও বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য তারা দিতে পারতেন না। সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য লাগে যখন দেখি বড় বড় আলেম-ওলামা ওয়ায়েজরাও অবুঝ হুজুগে পাবলিকের সুরে কথা বলেন। কিছুদিন আগে টকশো ও ওয়াজে দুই জন বড় মুফতির বক্তব্য শোনলাম, কোনোভাবেই নাকি মসজিদের জামাত নিষিদ্ধ করার সুযোগ নেই! আযানে নতুনত্ব আসার সুযোগ নেই। কথা তো ঠিক, তবে উনি যদি সঠিকটা জানতেন তাহলে হয়তো বলতেন মসজিদে আসাকে যে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, আযানে যে নতুন শব্দ যোগ করা হয়েছে তার সঠিক, কুরআন-সুন্নাহয় তার প্রমাণ রয়েছে।
আরেক বক্তা বললেন, মক্কা-মদীনাকে মুসলিমবিশ্ব থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে! তাওয়াফ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রওযায়ে আতহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, আপনারা মক্কা-মদীনা মসজিদ বন্ধ করে দিয়ে ভেবেছেন আল্লাহর আযাব থেকে বেঁচে যাবেন, যদি ঘরেও আযাব আসে তখন কী করবেন? উনি বলছেন আর আবেগে কান্না করে বুক ভাসাচ্ছেন, সামনের জনগণও আবেগে কাঁদছে হুজুরের সঙ্গে।
আমি ভাবছিলাম, এতো আবেগ কোথ্যেকে আসে! এসবের বাস্তবতা কতটুকু! বাস্তবতার নিরিখে মক্কা-মদীনার সুরক্ষাকল্পে বক্তব্যগুলো কতটুকু সত্য ও যুক্তিযুক্ত! আর এসব কথা একজন আলেম কেমন করে বলেন! কিসের ভিত্তিতে বলেন! তারা তো বড় বড় আলেম। তারা ইসলাম জানেন না, কুরআন হাদীস বোঝেন না এমনটা তো নয়। তাহলে? এর উত্তর আমার জানা নেই। দিতেও চাই না। শুধু এতটুকু বলবো, আসুন কুরআনটা আরেকবার খুলে একটু দেখি, হাদীসের পৃষ্ঠাগুলো একটু উল্টাই। অনেকদিন হলো এগুলো দেখা হয় না, খোলা হয় না কিতাবগুলো। হয়তো ধুলাবালির স্তুপ পড়ে গেছে এগুলোতে।
মনে হয় অন্ধের দেশে আমরা চশমা বিক্রি করছি। মসজিদে জামাত করা নিষেধ কিন্তু ছাদে তো কেউ নিষেধ করে নাই। আল্লাহ তুমি কোন বিলের মাটি দিয়ে বাংগালী বানিয়েছ মাবুদ? ।একমাত্র তুমিই পারো এদের বুঝাইতে ।