জাতি হিসেবে আমরা অনেক গর্ব করি কারন স্বাধীনতা আর ভাষার জন্য আমাদের দেশের নাম সরনাক্ষরে লেখা আছে বিশ্বের কাছে। আর এ স্বাধীন দেশ কে রক্ষা করার জন্য নিয়োগ করা আছে পুলিশ বাহিনী । অথচ হাস্যকর হলে ও সত্য এ পুলিশ বাহিনী পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মহিলা সাংবাদিক কে তার অপরাধ সত্য ঘটনা উন্মচন করা।
রোজিনা একা নন, ঘটনা কেবল আজকের নয়, ঘটনা শুধু ঢাকারও নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখার জন্য সাংবাদিক কাজলকে গুম করে এখনও হয়রানি চলছে, লেখক মুশতাক হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছেন, শিল্পী কিশোর কারাগারে নির্যাতিত হয়েছেন, একই কারণে আটক হয়েছেন দিদারসহ আরও অনেকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসী, দখলদার, লুটেরা, ধর্ষকদের হুমকি, নির্যাতন, মিথ্যা মামলার মুখে আছেন বহু দায়িত্বশীল সাংবাদিক, লেখক, শিল্পী, সংগঠক। সারা দেশ জুড়ে আজ যে প্রতিবাদ ও ধিক্কারের আওয়াজ উঠেছে তার মধ্যেই আছে নিরাপত্তার পরিসর, তাকে শক্তিশালী করার মধ্যে দিয়েই পাওয়া যাবে মত ও সত্য প্রকাশের স্বাধীনতার সন্ধান। যারা অতীত খুঁজতে পছন্দ করে।
যারা প্রশ্ন করছেন রোজিনার আগে আমাদের দেশ সম্পাদক , দৈনিক সম্পাদক নিয়ে প্রতিবাদ হলে আজকে এই অবস্থা হত না। তাদের কথা একদম ঠিক। সঙ্গে যোগ করি:
১. আমরা যদি ব্লগারদের গ্রেপ্তার ও দেশ ছাড়া না করতাম।
২. আমরা যদি তারও আগে তসলিমাকে দেশ ছাড়া না করতাম।
তাহলে আজকের পরিস্থিতি হত না।
আপনার দ্বিমত থাকতে পারে। ভালো লাগতে না পারে। তার প্রতিবাদ লেখা দিয়ে করবেন। মুখ দিয়ে করবেন। তাকে বকাঝকরা করবো। কিন্তু আমার দেশের মেয়েকে দেশ ছাড়া করলাম। তসলিমাকে ভালো লাগুক না লাগুক তার লেখা এখনো দেশ জুড়ে আছে। বেশি বেশি করে আছে। শুধু সে এই দেশে নাই। আমার দেশের মেয়ে অন্যায় করলেও তাকে দেশ পরিত্যাগে বাধ্য করা বা হত্যা করার হুমকি দেওয়ার অধিকার আমার নাই।
তসলিমা সেদিন দেশ ছাড়া না হলে, সেদিন ব্লগারদের গ্রেপ্তার না হলে দৈনিক সংগ্রাম, আমার দেশ, যায় যায় প্রতিদিন বন্ধ হতো না।
তসলিমা দেখলে আপনাদের ইমানি চেতনা জাগে কিন্তু জেনে রাখুন সিলেকটিভ ন্যায় অন্যায়ের কারণেই আজ আমাদের এই পরিনতি। একেকটা ঘটনা ঘটে, আমরা নতুন কইরা বুঝতে পারি কোন কারাগারে আমরা বসবাস করতেছি, কোন যন্ত্রনালয়ে আমরা জিন্দেগী কাটাচ্ছি। রোজিনার সাথে ঘটে যাওয়া এই নির্মম ঘটনার পর লীগাররা দেখলাম ‘উপনিবেশিক আইনকানুন’ নিয়া কথাবার্তা বলছেন। অবাক হলাম। কিন্তু তারা উপনিবেশিক আইনকানুন নিয়া বললেও তাদের দৌড় আমলাতন্ত্র পর্যন্ত। তাদের দুখ হচ্ছে আমলারা তাদের চাইতে বড়ো আওয়ামীলীগ হয়ে উঠেছেন। তারা বিদ্যমান আওয়ামি রেজিমের টিকে থাকার সাথে এই উপনিবেশিক আইনকানুনের কোনো মিল খুইজ্জা পান না। তদপুরি, তারা যে বুঝতে পারছেন এইসব আইন উপনিবেশিক এবং এই আইন ইউজ কইরাই এই রেজিম সাংবাদিকদের নির্যাতন চালাইতেছে, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কবর রচনা করছে, তাদের বুঝটাকেই আপাতত স্বাগত জানাই।
তো, যা বলছিলাম, এই ঘটনাগুলো আমাদেরকে জানান দেয়, আমাদেরকে একটা বৃহত্তর সমাজ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিবাদ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদেরকে সক্রিয় থাকতে হবে, বিভিন্ন ফরম্যাটে যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তাই আসুন আমি আপনি সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট, ক্যামেরা জার্নালিস্ট ও অধিকারকর্মী, আপনি যে-ই হোন না কেন, আপনি আসুন। দাড়াই। আমাদের বাচার জন্য। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বাচানোর জন্য। এমন না যে রোজিনাকে মুক্ত করলেই সংবাদমাধ্যম বেচে যাবে, কিন্তু কীভাবে এই নির্জীব অবস্থাকে সজীব করা যায়, তা নিয়ে আলাপটা চালু হোক। মনে রাইখেন, কয়দিন আগে একজন সাংবাদিকের আর্তনাদ শুনেছিলাম। ‘আমাকে মাইরেন না, আমি কাউরে কিছু কমুনা’। সেই আক্রমণকারী আছিল ‘অজানা’। অবস্থার ‘উন্নতি’ ঘটেছে। এবার সাংবাদিককে আক্রমণ করা হয়েছে খোদ সচিবালয়ে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, দিনকে দিন পরিস্থিতি খারাপ । আর এভাবে চলতে থাকলে একদিন আমাদের কেও সুরক্ষিত বাহিনী দিয়ে গেপ্তার করা হবে আজ হয়তো সাংবাদিক রোজিনাকে নিয়ে আমরা লিখতে পারছি কাল আমাদের বেলায় হয়তো গুম করে ফেলা হবে তখন মিডিয়া কেন আপনার কাছের কেউ জানতে পারবেনা। এটাই চরম সত্য।
3 comments
সাংবদিক পেটানো কালচার বাংলাদেশর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যে সব দল সরকার গঠন করেছে সবদল এই মহান কাজগুলো করেন তাদের সব অপ…… হালাল করার জন্য
সাংবাদিক এখন দলীয় ব্যানারে চলে গেছে যারা সরকারের হালুয়া রুটির ভাগ নেয় তারা সরকার গুনগানে ব্যস্ত আর কিছু ভিন্ন মতের সাংবাদিক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে গেলে তার উপর চলে নির্যাতন।
সাংবাদিকরা এখন দলীয়ভাবে পরিচিত হয়ে গেছে তাদের সত্যর পক্ষে কলম ধরার মত সাংবাদিক কমে গেছে। তাই এই অবস্থা