লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের পানপাড়া বাজারে দারুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের পায়ে শিকল পরিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে রামগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া শিক্ষকরা হলেন- মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো. আশেক এলাহী তারেক। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষার্থীর নানি পারভিন আক্তার বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, গ্রেফতার আশিকুর রহমান তারেক লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের দেওয়ান বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে। আর প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম রায়পুর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কাট ব্যবসায়ী ফজলুল করিমের ছেলে।
জানা গেছে, দুই বছর আগে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে দারুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন শহীদুল ইসলাম। শহীদুল তার বাবা মফিজুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, স্ত্রী রাশেদা বেগমসহ কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে একটি পরিচালনা কমিটি করে ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শহিদুল ইসলাম গত ১১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র আরমানের পায়ে শিকল পরিয়ে সপ্তাহব্যাপী তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালান। এছাড়া একই বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেনকে দিয়ে শহীদুল তার শরীর ম্যাসাজ করার পাশাপাশি নির্যাতন করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আরমান ও জাহিদকে বিষয়টি গোপন রাখার নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক।
নির্যাতিত শিক্ষার্থী মো. আরমান হোসেনের নানি পারভিন আক্তার জানান, ‘আরবি পড়াশোনা করার জন্য আমার নাতি আরমান হোসেনকে মাদ্রাসায় দিয়েছি। সেখানে যে শিকল পরিয়ে এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, তা আমরা জানতাম না। মাদ্রাসার একজন গোপনে ভিডিও ধারণ করায় আমরা তা দেখে নাতিকে জিজ্ঞাসা করলে গতকাল রাতে জানতে পারি। তার পায়ে শিকলের দাগ এখনো আছে। আজ তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। এমন অমানবিক ঘটনার জন্য জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি।’
ওসি জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো. আশেক এলাহী তারেককে গ্রেফতার করে লক্ষ্মীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
Ref: ইত্তেফাক
3 comments
এমন নির্যাতন সত্যি আধুনিক যুগে দূঃখজনক অপরাধীর শাস্তি দাবি করছি
মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র আরমানের পায়ে শিকল পরিয়ে সপ্তাহব্যাপী তার ওপর অমানবিক নির্যাতন বর্বরতা ছাড়া আর কিছু না ওদের গাছে জুলি মাদার গাছের ডাল দিয়ে পিটাতে হবে
দেশের আইনে আছে ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ে হাত বা শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না এরা তাই এদের বিচার দাবী করছি