খালেদা ইসলাম (২৫) নামের এক গৃহবধূর শরীর অ্যাসিড ছুড়ে ঝলসে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার পূর্ব দরবারপুরে এ ঘটনা ঘটে।
অ্যাসিডদগ্ধ খালেদা ইসলাম পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের প্রবাসী লিখন আহমেদের স্ত্রী। অ্যাসিডে তাঁর মুখ, গলা ও হাতের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। তাঁকে প্রথমে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
খালেদা ইসলামের বরাত দিয়ে তাঁর স্বজনেরা বলেন, খালেদার স্বামীর পক্ষের লোকজন তাঁর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছেন। তিনি তাঁদের চিনতে পেরেছেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি মো. আসাদুজ্জমানসহ ফেনীর পুলিশ কর্মকর্তারা খালেদাকে দেখতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে যান।
পুলিশ ও খালেদা ইসলামের পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুরের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে খালেদা ইসলামের সঙ্গে পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের প্রবাসী লিখন আহমেদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে লিখনের মা, ভাই ও বোনেরা খালেদাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকে।
গত ৭ আগস্ট খালেদা ইসলামকে চিকিৎসার নামে নির্যাতন করা হয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় খালেদার পরিবারের পক্ষ থেকে ফুলগাজী থানায় মামলা করা হয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ননদ হাসিনা আক্তার ও ননদের স্বামী আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খালেদা ইসলামের পারিবারিক সূত্রে আরও জানা গেছে, খালেদা ইসলামকে বাড়িতে রেখে আজ রোববার সকালে তাঁর মা শাহেন আরা বেগম, বোন শারমিন আক্তারসহ কয়েকজন ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধের দাবিতে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তাঁরা খবর পান কে বা কারা জানালা দিয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে খালদার শরীর ঝলসে দিয়েছে। খবর পেয়ে তাঁরা বাড়িতে ফিরে খালেদাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ইকবাল হোসেন ভূঁঞা জানান, অ্যাসিডে খালেদা ইসলামের মুখ, গলা ও হাতের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর দুপুরেই র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফুলগাজী উপজেলার গোসাইপুরের মো. তারেক মজুমদার (২৫) ও নীলক্ষ্মী এলাকার আবদুল্লাহ আল মিনারকে (১৯) আটক করেছে।
ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, গৃহবধূ খালেদা ইসলামের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আটক মো. তারেক র্যাব হেফাজতে ও আবদুল্লা মিনার ফুলগাজী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
সুত্রঃ একাত্তর
5 comments
দেশে আবার কি এসিড বব্যহার বের গেল নাকি?
স্বামীর বাড়ি নির্যাতনের শিকার হয়ে বাপের এসে এসিড আক্রান্ত নিশ্চয় ষড়যন্ত্র
খালেদার স্বামীকে গ্রেপ্তার করলে আসল অপরাধী পাওয়া যাবে
এসিডের নির্যাতন দেশ থেকে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছিলো আবার নতুন করে শুরু হয়েছে
মানুষ দিন দিন নৃশংস হায়েনার মতো হয়ে উঠছে মনে কোন দয়া-মায়া নেই