’অতিমারি-উত্তর শিশুদের স্কুলে ফেরা’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সংলাপে বক্তারা বলেছেন, করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর স্কুল খোলা হয়। কিন্তু ‘দেখা যাচ্ছে ‘ঝরে পড়া’ শিশুর সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে। গবেষণা ও জরিপ অনুযায়ী এই সমস্যার মূল কারণ বাল্যবিবাহ এবং শিশুশ্রম। করোনা কালে বাংলাদেশের অধিকাংশ শিশু মূলত দরিদ্রতা এবং অন্যান্য সামাজিক কারণে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমের শিকার হয়েছে যা প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অধিকতর তীব্র।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গণসাক্ষরতা অভিযান-এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সরকারের প্রস্তুতি এবং পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার বাস্তবায়নের যায়গায় সমন্বয়ে জোর দিতে হবে । বিয়ে হয়ে যাওয়া শিশুরা উপবৃত্তি পাচ্ছে না। মাঠ পর্যায়ে সামগ্রিকভাবে যাতে সকল শিশু উপবৃত্তি পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রায় ১০-১২ শতাংশ মেয়ে শিশুরা বাল্যবিবাহের শিকার। এটি যতটা না অর্থনৈতিক, তার থেকেও অনেক বেশি সামাজিক সংকট। অভিঘাতের ফলে শিশুদের পরিবারে বিভিন্ন ধরণের ব্যয়ের ক্ষেত্রে সঙ্কোচন হয়েছে। দেখা গিয়েছে তারা কখনো আমিষের পরিমাণ কমিয়েছেন, কখনো খাবারের পদের পরিমাণ কমিয়েছেন, আবার কখনো একবেলা খাবারও কমিয়েছেন। তবে আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, অন্তত ১৫-২০ শতাংশ পরিবারে শিশু খাদ্যের ক্ষেত্রেও ব্যয় সঙ্কোচন করতে হয়েছে যা শিশুদের পুষ্টিহীনতা অনেকাংশে বাড়িয়েছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, অতিমারির কারণে শিশু শ্রম ও অল্প অর্থে শিশুশ্রমিক নিয়োগ বেড়ে গেছে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণির মেয়েরা স্কুলে ফিরছেনা কারণ তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। ২১টি জেলায় জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সের প্রায় ১৩ হাজার মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে যা বেশ আশংকাজনক। যৌন নির্যাতন ও শারীরিক সহিংসতাও এর মধ্যে বেড়েছে। শাহীন আনাম সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং সচেতনতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন। পাশাপাশি সাহায্যের জন্য হেল্পলাইন নাম্বার বাড়ানো এবং এই সংকটকালীন সময়ে শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ রোধে জাতীয় ক্যাম্পেইন এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন রয়েছেও বলে তিনি মনে করেন।
আইএলও’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর, সৈয়দা মুনিরা সুলতানা বলেন, গত ২ বছরে শিশু শ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বৈশ্বিকভাবে এই সংখ্যা ৮৬ মিলিয়নেও পৌঁছাতে পারে। নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মোট ১৫টি সামাজিক সেক্টর নির্ভর মন্ত্রণালয় আছে যাদের বাজেটের শতকরা ২০ ভাগ শিশুদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এই বাজেট কিভাবে করা হচ্ছে এবং এর বাস্তবায়ন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তার সঠিক ফলোয়াপ করলে সমস্যা অনেকটা নিরসন করা সম্ভব।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
5 comments
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়া শিশুর পিতা-মাতারা নিম্ন আয়ের মানুষ। করোনাকালে তাদের আর্থিক অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়ায় শিশুরা আর স্কুলে ফিরতে পারছে না
করোনাকালে যে যেভাবে পারছে কাজ, ক্ষুদ্র ব্যবসা নিয়ে নামছে তারা (শিশুরা) ও অংশগ্রহন করছে এখন তাদের স্কুলে ফিরে আনা কঠিন ব্যাপার
করোনায় দরিদ্র পিতা-মাতা তাদের কন্যা শিশুকে বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। সেদিকে সরকারি কোন নজরদারি ছিল না
করোনাকালে প্রায় ১০-১২ শতাংশ মেয়ে শিশুরা বাল্যবিবাহের শিকার। এটি যতটা না অর্থনৈতিক, তার থেকেও অনেক বেশি সামাজিক সংকট কথা একেবারে সত্য সামাজিকভাবে কোন সরকারী বসরকারী প্রতিষ্ঠান সেভাবে এগিয়ে আসেনি
বাংলাদেশের অধিকাংশ শিশু মূলত দরিদ্রতা এবং অন্যান্য সামাজিক কারণে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমের শিকার হয়েছে যা প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অধিকতর তীব্র হয়েছে । যার দায়বদ্ধতা সরকারের উপর বর্তায়