বরিশালের গৌরনদীর বার্থী উলুমে দীনিয়া কওমি মাদরাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ ছাত্রকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। মাদরাসাছাত্র হাফেজ মো. সোয়াইব বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।
মাদরাসাছাত্রদের ব্যঙ্গ করে ডাকা ও অসদাচরণের প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ, মাদরাসার মুহতামিমকে লাঞ্ছিত এবং কিতাব বিভাগের ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় হাতুড়িপেটায় ১০ জন মাদরাসাছাত্র আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গৌরনদী উপজেলার বার্থী উলুমে দীনিয়া কওমি মাদরাসায়।
জানা যায়, ওই মাদরাসার নুরানি বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী প্রায়ই ব্যঙ্গ করে কিতাব বিভাগের ছাত্রদের ডাকেন। ছাত্ররা এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে সম্প্রতি কিতাব বিভাগের ছাত্র মো. শাহ্জালাল ও মো. মাহামুদকে পিটিয়ে আহত করেন। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত সোমবার সকালে মাদরাসার মুহতামিম মুফতি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে যায়।
বিচার দেওয়ার কারণে শিক্ষক মানিক বেপারী ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিন দুপুরে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে কিতাব বিভাগের ছাত্র রফিকুল ও মাহামুদকে পেটান। এ সময় অন্য ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মানিককে ধাওয়া করে। এ সময় শিক্ষক মানিক দৌড়ে মাদরাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তাঁকে প্রায় আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে ছাত্ররা বিচারের দাবিতে বার্থী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহজাহান প্যাদার বাড়িতে যায়। এ সময় শিক্ষক হাফেজ মানিক ও তাঁর মামা জাফর প্যাদার নেতৃত্বে বহিরাগত ১৫-২০ জন যুবক হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় হাতুড়িপেটায় কিতাব বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, আবু ইউসুফ, সোয়াইব, হোসেন, মো. হাসানউদ্দিন, হাবিবুল্লাহসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। হামলার সময় শাহজাহান প্যাদা বাড়িতে ছিলেন না।
অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী বলেন, কিতাব বিভাগের দুই ছাত্র বেয়াদবি করার কারণে তাদের বকা দেওয়া হয়েছে। মাদরাসার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য স্থানীয় একটি মহল ছাত্রদের দিয়ে অপবাদ রটিয়েছে।
মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আমিনুল ইসলাম বলেন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদার নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কিতাব বিভাগের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘাটাইলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৫ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ : এদিকে ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের ঝড়কা এলাকার শিকদার ক্যাডেট একাডেমির ষষ্ঠ শ্রেণির পাঁচ আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে ঘাটাইল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত শনিবার পাঁচ শিক্ষার্থীকে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান শিকদার। শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি মোবাইল ফোনে তাদের অভিভাবকদের জানায়। পরে অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। আহত শিক্ষার্থীরা হলো সাব্বির আহম্মেদ (১৩), প্রান্ত ইসলাম (১২), আরাফাত সিকদার রাফিন (১৩), মোশারফ হোসেন জয় (১২) ও সানবিন আহম্মেদ সাদ (১২)।
এদিকে প্রধান শিক্ষক শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি এলাকার একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি পক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।’ ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্রঃ কালেরকন্ঠ
9 comments
যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম এলাকার অনেক ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসায় চলে আসতো এখন বুজলাম এর মূল কারন।
লোক মুখে শুনতাম যে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় এইরকম মারধর করা হয় আজ এটা প্রমান পেলাম
এইটা ঠিক হয়নি এই মাদ্রাসার শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা হোক। এদের কারণে সব মাদ্রাসার বদনাম হয়
এই সমস্যার কারণে বাচ্চারা মাদ্রাসা যেতে চায় না
এরকম শিক্ষকর ২হাত কেটে ফেলা উচিৎ
ঐ শিক্ষক কোনো আলেম না ও একটা জালেম ওর ফাসি চাই
হায়রে নিষ্ঠুর! কোরআন শুধু তোতাপাখির মতো গিলে ফেলতে পারল। ভেতরের মর্ম বুঝল না! আল্লাহ, সবার অন্তরে এতটুকু মায়া মহব্বত যেন দেন যাতে এইটুকু বাচ্চার গায়ে হাত তোলে না কেউ।
কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক হাফিজি মাদ্রাসা গুলো আইনের আওতায় আনা উচিত
কয়েকজন আলেম বা মাদ্রাসা বাদে প্রত্যেকটা মাদ্রাসার আলেম কুলাঙ্গার, মাদ্রাসার ছাত্র নই তবে কয়েকটা মাদ্রাসায় আরবি পড়ার জন্য গিয়েছি এবং দেখেছি