মুসলিম মহিলাদের বিক্রয়ের প্রস্তাব করেছে এমন একটি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত সরকার। সম্প্রতি সেদেশের প্রশাসন এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও এই ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বারংবার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে সে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার এই ধরনের একটি জাল অনলাইন নিলাম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
ওয়েবসাইটটি গিটহাব নামক আমেরিকান কোডিং প্ল্যাটফর্মে তৈরি। যেখানে মুসলিম নারী বিক্রিকে ‘বুলি বাই’ বলা হয়। এটি এমন একটি বাক্যাংশ যা দক্ষিণ ভারতে ‘লিঙ্গ’ এর সাথে সংশ্লিষ্ট অশ্লীল অপবাদ এবং উত্তর ভারতে যার অর্থ ‘দাসী’। সাইটটিতে ১০০ জন মুসলিম মহিলার ছবি পোস্ট করা হয়েছিল।
মাইক্রোসফটের (গঝঋঞ) মালিকানাধীন গিটহাব’র এক মুখপাত্র জানান, হয়রানি, বৈষম্য এবং সহিংসতাকে প্ররোচিত করার বিষয়বস্ত্ত এবং আচরণের বিরুদ্ধে গিটহাবের দীর্ঘদিনের নীতি রয়েছে। তদন্তের পর আমরা একটি অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছি, যার সবকিছুই আমাদের নীতি লঙ্ঘন করেছে।
জুবায়ের, যিনি পুলিশকে তদন্তে সহায়তা করছেন, তিনি জানান, পেজটিতে পাকিস্তানি নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই এবং বিশিষ্ট ভারতীয় অভিনেত্রী শাবানা আজমির ছবি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া সেদেশের বেশ কিছু সাংবাদিক ও কর্মী বেশকিছু স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন। যেখানে তাদের ছবির পাশে লেখা রয়েছে, ‘আপনার বুলি বাই হল’।
এ ঘটনার জেরে টুইটারে অনেককে ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা গেছে। বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) অনলাইনে হয়রানি এবং মুসলিম মহিলাদের টার্গেট করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন? কংগ্রেস নেতা শশী থারুর টুইট করেছেন, অনলাইনে কাউকে ‘বিক্রয়’ করা সাইবার অপরাধ। আমি পুলিশকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রাপ্য। ভারতের প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব টুইট করে বলেন, সরকার এ বিষয়ে দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের পুলিশ সংস্থার সাথে কাজ করছে।
অন্যদিকে দিল্লি পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষের কাছে দায়ের করা অভিযোগে সাংবাদিক ইসমত আরা লিখেছেন, সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটটি মুসলিম মহিলাদের বিব্রত ও অপমান করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আরা, যিনি সাইটে তার ছবি খুঁজে পেয়েছেন, তিনি তার পুলিশ অভিযোগের একটি অনুলিপি টুইট করেছেন।
এ ধরনের অনলাইন হয়রানি ভারতের মুসলিম মহিলাদের জন্য নতুন কোন ঘটনা নয়। এর আগে গত জুলাইয়ে, সাংবাদিক, লেখক এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ ৮০ জনেরও বেশি মুসলিম নারীর ছবি সুলি ডিলস নামে একটি উপহাসকারী অ্যাপে পোস্ট করা হয়।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
3 comments
প্রতিটা ধর্মের মানুষের নারীদের প্রতি সম্মান করা উচিত। নারী মা, বোন, স্ত্রী।
হোক না হিন্দু বা মুসলিম নারী তো মায়ের জাতি নারীকে সম্মান দিতে শিখো কেননা সেই মায়েই এই পূথীবির আলো দেখাইছে,
ভারতীয় এই ওয়েভসাইট নিষিদ্ধ করে তাদের সঠিক বিচার হোক। মুসলিমদের প্রতি এদের এত হিংসা কেন?