শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী- এমন অভিযোগ এনে শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর মা। ঘটনাটি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার। শুক্রবার রাতে রামগড় থানায় এ নিয়ে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
এই মামলায় অভিযুক্ত হলেন- রামগড় উপজেলার ১ নম্বর রামগড় ইউনিয়নের থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন (৪২)। তিনি ওই ইউনিয়নের লামকুপাড়া এলাকার নুরুল হুদার ছেলে। ভিকটিমও একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মমলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় ছুটির পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেন বাড়ির কাজ দেখানোর কথা বলে ভিকটিম ছাত্রীসহ অপর এক ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নেন। পরে অপর ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে বসিয়ে রেখে ভিকটিমকে বিদ্যালয়ের টিউবওয়েলের পাশে নিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। ছাত্রীটি শারীরিকভাবে অসুস্থ বুঝতে পেরে ওই শিক্ষক ভিকটিমের হাতে ১০০ টাকার একটি নোট গুজে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়ি গিয়ে ভিকটিম বিষয়টি তার মাকে জানায়।’
এরপর শুক্রবার বিকেলে তার পরিবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার বাদী ভিকটিমের মা বলেন, ‘মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বিষয়টি জানায়। বেলায়েত শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক। তার এমন শাস্তি হওয়া উচিত যে, যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দেবী জানান, স্কুল ছুটির পর বাসায় পৌঁছামাত্র সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান তাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করেন। তাদের স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে কোনো ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাবে না বলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।’
রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে পুলিশের তৎপরতা চলমান রয়েছে।’
রামগড় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এমন কিছু ঘটে থাকলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে, অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, ‘বিদ্যালয়ে এক বহিরাগত ছেলের আনাগোনা ছিল, আড্ডা ছিল। ওকে বাঁধা দেয়ায় ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসিয়েছে। এই ছাত্রীকে দিয়ে মিথ্যে নাটক সাজিয়েছে।’
সুত্রঃ কালেরকন্ঠ