খুলনায় বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি পিবিআইর পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৮ জুন) দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১- এর বিচারক দিলরুবা সুলতানা এ নির্দেশ দেন।
এর আগে, মাসুদ আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পরিদর্শক মাসুদ ২৬ মে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় ১৪ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন লাভ করেন। বুধবার উচ্চ আদালতের জামিন মেয়াদের শেষ দিন ছিল। নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পিবিআই পরিদর্শক মাসুদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ করে ১৫ মে ওই কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলা করেছিলেন।
মামলায় ওই কলেজছাত্রী উল্লেখ করেন, মাসুদ তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। খুলনা থানার পুলিশ তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আলমত সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। সেখানে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
৩১ মে ওই ছাত্রী খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে ঘটনার বিবরণ দিয়ে ওই ছাত্রী বলেন, পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ ইউটিউব চ্যানেলে গান বাজনা করেন। সেখান থেকে মাসুদের নম্বর সংগ্রহ করেন তিনি। ১০ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফোনে সমস্যার কথা বললে মাসুদ তাকে পিবিআই অফিসে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে মাসুদ তার ফোনের সবকিছু দেখে ব্যস্ত আছে বলে তাকে পরে দেখা করতে বলেন।
মাসুদ তাকে ফোন করে একটি ইমো অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বলেন। পরে ইমোতে তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় নিয়মিত। প্রতিদিন ওই নারীর সঙ্গে ৫ বার করে কথা বলতেন মাসুদ। ১৩ মে ফোন দিয়ে ওই নারীকে জানানো হয় ঢাকা যাচ্ছেন তিনি। ১৪ মে ফোন দিয়ে মাসুদ তাকে পরেরদিন দেখা করার কথা বলেন। তখন ওপাশ থেকে জানানো হয় পিবিআই অফিসে, মাসুদ প্রতি উত্তরে বলেন না।
১৫ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইমোতে ফোন দিয়ে মাসুদ তাকে ধর্মসভা মন্দিরের সামনে আসতে বলেন। ওই নারী ধর্মসভা মন্দির কোথায় তা জানে না। উত্তরে মাসুদ রিকশায় করে সেখানে আসতে বলেন। সেখানে তাকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম অফিসে যেতে হবে। এরপর ধর্মসভা মন্দির থেকে মোটরসাইকেলযোগে তাকে ছোট মির্জাপুর একটি অফিসে নিয়ে যায়। রুমের ভেতর যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপরিচিত এক ব্যক্তি অফিসের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। এরপর ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাসুদ আমাকে ধর্ষণ করেন। নিজেকে রক্ষার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি।
ধর্ষণের ঘটনা কাউকে কিছু জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেন মাসুদ। এর আগে, তাকে মারধর করাও হয়। ওই অফিস থেকে বের হওয়র পর তিনি রিকশায় উঠে সরাসরি থানায় চলে আসেন। মাসুদও মোটরসাইকেল নিয়ে তার রিকশার পিছু নিয়ে থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ওখানে মাসুদের অবস্থান দেখে ভয় পান ওই নারী। এরপর খুলনা থানার একজন পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনের নম্বর সংগ্রহ করে বিষয়টি তাকে জানান ওই নারী।
সুত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪.কম