রাজধানীর নীলক্ষেতের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হলের ফটকের সামনে এক তরুণী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। পুলিশ অভিযুক্তকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই তরুণী। যেখানে একটি ছবি সংযুক্ত করে ও্ই তরুণী লিখেছেন, ‘এই যে আমার ছেড়া জামাটা দেখতেছেন, এটাই আপনাদের বাংলাদেশ!!’
ভুক্তভোগী তরুণী ফেসবুকে করা পোস্টে লিখেছেন, এই দেশে মেয়েদের মলেস্ট হওয়া, হ্যারাস হওয়া, রেপ হওয়া, গালি খাওয়া স্বাভাবিক ভেবে মেনে থাকতে পারলে থাকেন, নাইলে এই রাগে দুঃখে ট্রমাটাইজ হয়ে সুইসাইড করেন, মরে যান, যা খুশি করেন কিন্তু প্রতিরোধ কিংবা বিচারের আশা কইরেন না!!
একটা লোক বাইক নিয়ে রিকশার পেছন থেকে এসে আমার বুক খামচে টেনে হিচড়ে জামা ছিড়ে আমাকেই গালাগাল করতে করতে চলে গেলো, আশেপাশে একটা পুলিশ নাই, একটা মানুষ এসে ধরলোনা আমার চিৎকার শুনে!! আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না!! আমার শরীর এখনো কাঁপতেছে ভয়ে!!
গত কয়েকমাস যাবত আমি ভয়ংকরভাবে মেন্টালি আন্সটেবল। আজকেও আমার মনের অবস্থা ঠিক ছিলোনা। কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে বাসায় ফিরতেছিলাম। আমার এই ড্রেসে ঠিক কি খারাপ ছিলো যার কারনে এমন ঘটনা ঘটলো?!! পোশাকের দোষ দেওয়া মানুষগুলো সালোয়ার কামিজে একটা মেয়েকে কি নিয়ে দোষ দিবে?? আমার সাথে এমনটা কেন হলো? কখনো ভাবিনাই আমার ঢাকাশহরে আমার সাথেই এমন কিছু হতে পারে!! একটা মানুষ আগায় আসলোনা!! একটা মানুষও না!!
এই দেশে থাকতে চাইলে বিনিময়ে রাস্তাঘাটে গায়ে হাত দেয়ার পারমিশন দিতে হবে??! নাকি এখন সন্ধ্যার পর বাসার বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিবো??! আর কারে গিয়ে বললে একটু স্বাভাবিক সিকিউরভাবে এদেশে বাঁচতে পারবো???
এ বিষয়ে তরুণী বলেন, ‘আমার হাতে মুঠোফোন ও কানে হেডফোন ছিল। আমার গলায় কোনো ধরনের গয়না ছিল না। এএফ রহমান হলের সামনে পেছন থেকে একটা মোটরসাইকেল আসে। আমার কানে হেডফোন এবং ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে বিষণ্ন থাকায় অন্য কোনো দিকে আমার মনোযোগ ছিল না। মোটরসাইকেলে থাকা হেলমেটধারী ওই ব্যক্তি হঠাৎ এক হাত মোটরসাইকেলে রেখে অন্য হাতে বাঁ পাশ থেকে আমার গায়ে হাত দেয়। জোরে টান দেওয়ার কারণে আমার জামা ছিঁড়ে যায়। তখন আশপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চিৎকার করলেও কেউ সেভাবে খেয়াল করেনি।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে বিষণ্ন থাকায় মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটটিও খেয়াল করেননি। তিনি ধানমন্ডিতে ভাইয়ের বাসা থেকে রিকশায় করে পুরান ঢাকায় নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। তবে পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু উন্মুক্ত তাই পথচারীদের কেউ যদি কোনো বখাটের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মানবিকতার দিক বিবেচনায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতা করবে। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেছি। বাকি বিষয়গুলো পুলিশ প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
সুত্রঃ বিডি২৪ লাইভ.কম