পায়ে লোহার শিকল বাঁধা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার এক শিশু শিক্ষার্থী রাতের অন্ধকারে পালিয়ে এসেছিল মাদ্রাসা থেকে। পথে টহল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পায়ে লোহার শিকল বেঁধে নির্যাতনের আলামত পেয়ে পুলিশ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে আটক করেছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। ১০ বছর বয়সী ওই শিশু উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের দেউলিয়া নুরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার নাজেরা শ্রেণির আবাসিক ছাত্র ছিল। নির্যাতন সইতে না পেরে পালানোর সময় গত শনিবার রাতে উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রোববার পুলিশ দেউলিয়া নুরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে (৩২) আটক করেছে।
পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারের পর উঠে আসে নির্যাতনের নানা কাহিনি। পুলিশকে শিশুটি জানায়, মাদ্রাসায় তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। করা হতো নানা ধরনের নির্যাতন। নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে সে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সময় রাত তিনটার দিকে সে থানার টহল পুলিশের গাড়ির সামনে পড়ে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে থানায় নিয়ে যায়।
নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলের বয়স ১০ বছর। শিশুটিকে চলতি বছরের শুরুতে দেউলিয়া নুরানীয়া মাদ্রাসার নাজেরা শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের নির্যাতনের কথা তিনি শুনে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গত শনিবার আমি ছেলেকে দেখতে মাদ্রাসায় যাই। সে তখন নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যেতে বলে। তারপর আমি তাকে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় রেখে আসি। অভিযোগের বিষয়টি অধ্যক্ষ জানতে পারেন।
এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করেন। এ কারণে সে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।’
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর পরিবার বা অন্য কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্রঃ প্রথম আলো