লালমনিরহাটে বেত্রাঘাত করার পর থেকে নিখোঁজ মাদরাসাছাত্র মো. আদনান সাহিলের (১২) সন্ধান মেলেনি ছয় দিনেও। শুক্রবার (১০ জুন) জুমার নামাজের পর থেকে আদনান নিখোঁজ হয়। আদনানের সন্ধানে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
নিখোঁজ আদনান লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা আল জামিয়া ইসলামিয়া মডেল হেফজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেতনা গ্রামের আবদুল হালিমের দ্বিতীয় ছেলে।
নিখোঁজের ঘটনায় আদনানের বাবা আবদুল হালিম গত রোববার লালমনিরহাট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
আদনানের বাবা সময় সংবাদকে জানান, নিখোঁজের পর শনিবার সন্ধ্যার দিকে মাদরাসার পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে তাকে বিষয়টি জানানো হয়।
আদনানের বাবার ধারণা, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আদনানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হয়তো কোথাও লুকিয়ে রেখেছে। মাদরাসার শিক্ষকের মাধ্যমে আদনানের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে౼এমন আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
মাদরাসা সুপার মো. মজিবর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘নিখোঁজ আদনানকে আমরাও খুঁজছি, কোথাও এখনো তার সন্ধান মেলেনি। গত বুধবার রাতে আদনানের কাছে মোবাইল ফোন থাকা নিয়ে শাসনের একপর্যায়ে একজন নতুন শিক্ষক তাকে কয়েকটি বেত্রাঘাত করেন। এতে সে ভয় পেয়ে যায়। এরপর শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা বিষয়টি তার বাবাকে জানিয়েছি।’
আবদুল হালিম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মাদরাসায় গত বুধবার রাতে শাসনের নামে মারধর করা হয়েছিল। এরপর গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে সে নিখোঁজ, অথচ আমাকে ফোন করে জানানো হয় শনিবার সন্ধ্যায়। আমি রোববার লালমনিরহাট সদর থানায় জিডি করেছি। তাকে খুঁজে না পাওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।’
আরও পড়ুন: সাগরে গোসল করতে নেমে স্কুলছাত্র নিখোঁজ
লালমনিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহা আলম বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন আদনানের বাবা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার জন্য লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মো. শাহা আলম আরও বলেন, ‘আদনানের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে বুধবার ১৫ জুন দুপুরে আমি নিজেই ওই মাদরাসায় গিয়ে মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে এসআই মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে সময় সংবাদকে বলেন, নিখোঁজ মাদরাসাছাত্র আদনানের ঘটনাটি তদন্ত করার পাশাপাশি তাকে খোঁজা হচ্ছে, তবে এখনো তার সন্ধান মেলেনি।
গোকুন্ডার তিস্তা বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হজরত ফাতেমাতুজ্জহরা দাখিল মাদরাসা। পরে তা আল জামিয়া ইসলামিয়া মডেল হেফজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসা নামে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
সুত্রঃ সময় টিভি