বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৬৯ শিশুসহ পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
নীতি পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যু ঘিরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ইরান জুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা একশতম দিন পার করেছে। ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর এত বড় সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভ দেশটিতে আর দেখা যায়নি। যদিও এ বিক্ষোভ এরইমধ্যে বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস’ নিউজ এজেন্সির (এইচআরএএনএ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত পাঁচশর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৬৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে।
বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বা হবে। দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরও হয়ে গেছে। বাকিরা আপিল করার চেষ্টা করছেন।
এরআগে ২০১৭ সালে একবার ইরান বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। যে বিক্ষোভ পরের বছরের শুরু পর্যন্ত চলেছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে আবারও দেশটির সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ শুরু করেছিল। কিন্তু এবারের বিক্ষোভের উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে নারীদের অংশগ্রহণ।
‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ স্লোগানে এবারের বিক্ষোভে বলতে গেলে নারীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং সমাজের সব স্তরের মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন।
ইরানের অনেক তারকা সরাসরি এই বিক্ষোভে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। যে কারণে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার বা নির্বাসিত হতে হয়েছে।
এক তরুণ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তার সমালোচনা করায় ইরানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারানেহ আলিদোস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে কুখ্যাত ইভিন কারাগারে রাখা হয়েছে।
তারানেহ এর আগে বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তার হিজাব ছাড়া একটি ছবি প্রকাশ করেছিলেন। ইরানের আইনে নারীদের সবসময় হিজাব পরা বাধ্যতামূলক।
তারানেহ অস্কার পুরস্কার বিজয়ী সিনেমা ‘দ্য সেলসম্যান’ এ অভিনয় করেছেন।
ওই সিনেমার পরিচালক আসগর ফরহাদি ইন্সটাগ্রামে লেখেন, ‘‘আমি তারানেহর সঙ্গে চারটি সিনেমায় কাজ করেছি। তার দেশের মানুষের প্রতি তার ন্যায়সঙ্গত সমর্থন দেওয়ায় এবং জারি করা অন্যায় শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর কারণে আজ তিনি কারাগারে রয়েছেন।
‘‘যদি এই ধরনের সমর্থন দেখানো অপরাধ হয় তবে এই ভূমির লাখো কোটি মানুষ সেই অপরাধে অপরাধী।”
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইরানের বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। নানা ক্ষেত্রের জনপ্রিয় মানুষ ও তারকারাও সরাসরি বিক্ষোভের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন।
বিক্ষোভের মুখে ইরান সরকার নীতি পুলিশি ব্যবস্থা বিলুপ্ত ঘোষণা করলেও বাধ্যতামূলক হিজাব আইন পর্যালোচনার করে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।
সুত্রঃ বিডি নিউজ.২৪.কম