হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার এসআই শাহাজাদী আক্তার
যশোরে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর অবস্থায় স্ত্রী পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাজাদী আক্তারকে (৪০) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে যশোর শহরের খড়কি এলাকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে স্বামী পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নির্যাতনের শিকার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাজাদী আক্তার যশোর সদর কোর্ট জিআরওতে এবং স্বামী পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান ঝিনাইদহ পিবিআইয়ে কর্মরত।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি এসআই শাহাজাদী আক্তার অভিযোগ করেন, কামরুজ্জামানের সঙ্গে ২০০০ সালে তার বিয়ে হয়। তাদের দুই ছেলে স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করে। যৌতুকের দাবিতে স্বামী কামরুজ্জামান মাঝে মধ্যেই তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। এ কারণে তিনি যৌতুক আইনে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন। ছুটিতে বাড়ি এসে কামরুজ্জামান ঐ মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। এছাড়া কামরুজ্জামান পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে তিন বছর আগে দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন দাবি করে শাহজাদী আক্তার বলেন, ঐ ঘটনার পর তার ওপর নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে।
শাহজাহী আক্তার দাবি করেন, যৌতুকের মামলা তুলে নিতে অস্বীকার করায় শুক্রবার রাতে কামরুজ্জামান ছুরি দিয়ে তাকে একের পর এক আঘাত করতে থাকেন। ঠেকাতে গেলে মাথায়, হাতেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। পরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে এবং মেঝেতে ফেলে ব্যাপক নির্যাতন চালান। ছেলেরা তাকে রক্ষা করেন। ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তিনি ন্যায় বিচার চেয়েছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আব্দুস সামাদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এসআই শাহাজাদীকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এসআই শাহাজাদীকে নির্যাতনের বিষয়ে তারা এখনও কোনো অভিযোগ পাননি। তবে বিষয়টি ‘ডিপার্টমেন্টাল’। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি দেখছেন।
এদিকে, স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন স্বামী পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান। তিনি দাবি করেছেন, যে সময় এই ঘটনা দাবি করা হচ্ছে, তখন তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন। তার অনৈক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় প্রতিশোধ নিতে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে।
যৌতুকের মামলা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, এ ধরনের কোনো মামলার খবর তার কাছে ছিলো না। এই ঘটনার পর তিনি জানতে পেরেছেন। আর নিজের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
সুত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক