মুন্সিগঞ্জ শহরে দশম শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী জেসি মাহমুদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো মূল অভিযুক্ত আসামি বিজয় রহমানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ভুক্তভোগীর পরিবারের নিরাপত্তার শঙ্কায় শহরের কোটগাঁওয়ের ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে।
চ্যাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রহস্য উন্মোচন হলেও প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় জেসির পরিবার ও স্থানীয় মানুষের মাঝে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
কোন অদৃশ্য শক্তির ক্ষমতা বলে স্কুল শিক্ষার্থী জেসি হত্যার প্রধান আসামি বিজু ওরফে বিজয় রহমান ধরা ছোঁয়ার বাহিরে চলে যাবে বলেও মনে করছে কেউ কেউ। তবে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে জেসির মায়ের আর্তচিৎকার চলছেই।
এদিকে হত্যাকারী বিজয় রহমান বিজুর উৎশৃঙ্খল জীবন যাপন নিয়ে দিনদিন বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বিজুর (বিজয় রহমানের) সঙ্গে ছিল একাধিক নারীর অনৈতিক সম্পর্ক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও আদিবা নামে এক তরুণীকে কয়েকদিনে জন্য উধাও হয়ে গিয়েছিল বিজয়। পরে আবার ফিরে আসে। এর পর দুই পরিবারের মধ্যে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হবে এমন একটি আলোচনাও হয়ে থকে। কিন্তু এর পরেও নারীলোভী বিজু আদিবা ও জেসি সহ অন্য একাধিক নারীদের তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করতো ব্ল্যাকমেইলিং হুমকি ধামকি, ভয় ভীতির মাধ্যমে।
জেসির বাবা প্রবাসী সেলিম মাহমুদ জানান, আমার আদরের মেয়েটাকে ওরা লোমহর্ষক ভাবে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এখনো প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছি। প্রধান অভিযুক্ত বিজয় রহমানকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা সহ হত্যাকারীদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তিনি আরও জানান, খুনী বিজয় গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। আমি বিদেশের মাটিতে স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে জিদানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন আছি।
এ ঘটনায় পুলিশের নিরব ভূমিকা নিয়ে শঙ্কার কথা বলছে নিহতের ভাই শাহারিয়ার জিদান। বলেন, খুনী বিজয়ের বাড়ি একই এলাকায়। আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে কিছু হলে। পুলিশ আমাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে না আর আসামিকে ও ধরবে কি না, তাও বুঝতে পারছি না। এ অবাস্থায় আমার মা বারবার বোনের স্মৃতির কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, একটাই দাবি দ্রুত বিজয় সহ সব আসামির বিচার যেনো হয়। খুনীদের আমরা ফাঁসি চাই, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুজ্জামান বলেন, জেসির পরিবারকে যে কোন মুহুর্তে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তত। তাদের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক আছি। তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়োমিত রাখছি। বিজুকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের কোর্টগাঁও এলাকায় প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে স্কুল ছাত্রী জেসি মাহমুদকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ গুরুতর আহত করে বন্ধু বিজয় রহমান ও তার প্রেমিকা আবিদা। পরে বহুতল ভবনের ছাঁদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা সাজায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাতে মারা যায় জেসি।
এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের পরিবার। অভিযুক্ত আবিদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করলে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিষয়টি স্বীকার করে।
সুত্রঃ চ্যালেন 24.কম