ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে মো. মামুন (৩১) নামে এক গৃহ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সিআইডি সাইবার পুলিশ ইউনিটের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সিআইডি গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির এ কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও এলাকায় গৃহ শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করে থাকেন। দশম শ্রেণীর ছাত্রী ভুক্তভোগী সুমি (ছদ্মনাম) যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তো সেই সময় গৃহশিক্ষক মামুন পাঠদান করাকালে গোপনে ছাত্রীর অজান্তে তার গোপনাঙ্গের ছবি মোবাইলের মাধ্যমে ধারণ করে রাখে। পরে গোপন ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে কৌশলে সবার অজান্তে অভিযুক্ত মামুন বিভিন্ন সময় ছাত্রীর শরীরের গোপনাঙ্গের আরো ছবি তুলে নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাছ থেকে গোপন রাখে ভুক্তভোগী।
তিনি আরো জানান, এর মধ্যে সুমির অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে তার পরিবার গৃহশিক্ষক থেকে বাদ দেন মামুনকে। এরপর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি সুমির স্কুলে যাতায়াতের সময় আগে ধারণকৃত গোপনাঙ্গের ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার কুপ্রস্তাব দেয়। তবে রাজি না হওয়ায় মামুন সুমির পরিবারের ছবি ব্যবহার করে ভুক্তভোগীর মায়ের নামে ফেসবুকে একটি ফেক আইডি খুলে। ওই আইডি থেকে মামুন সুমির মায়ের ফেসবুক মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। সুমির মা মামুনের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দিলে মেয়ের গোপনাঙ্গের ছবি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে। বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত মামুন ওই ফেক আইডির মেসেঞ্জার থেকে সুমির মাকে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ও পর্নো স্থিরচিত্র এবং ভিডিও পাঠাতে থাকে।
অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, সমাজ ও লোক লজ্জার ভায়ে এতদিন কিছু না বললেও একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর পরিবার সিআইডির সাইবার পুলিশরে কাছে দারস্থ হয়ে অভিযোগ জানায়। সিআইডির সাইবার পুলিশ ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পায়। এরই ধারাবাহিকতায় সিআইডির সাইবার পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ভিডিও ধারণকৃত মোবাইলটি জব্দ করা হয়। মামুনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় গতকাল শুক্রবারই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সুত্রঃ ভোরের কাগজ