নড়াইলের লোহাগড়ায় আমগাছের সঙ্গে পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে আট মাসের শিশু সন্তানকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেছে পাষণ্ড বাবা মামুন শেখ (৩৬)। গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে নির্যাতনের ভিডিও এবং কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শিশুটির বাবা মামুন শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি লোহাগড়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে।
লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৩ বছর আগে লোহাগড়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের দাউদ শেখের ছেলে মামুন শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় কুলসুম বেগমের (৩০)। তাদের ঘরে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম রয়েছে। গত বছর মামুন শেখ তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো খোঁজখবর নেন না। তাদের ভরণপোষণ না দিয়ে তাদের মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করেন।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে স্বামী মামুন শেখ তার প্রথম স্ত্রী কুলসুম বেগমকে তার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলেন। যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে কুলসুমকে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন মামুন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাফুজা আক্তার সাথী (২৫)।
ঘটনার পর মামুনের দ্বিতীয় স্ত্রী বাড়ি থেকে চলে যাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে মামুন শেখ দুধের শিশু আল হাবিবকে (৮ মাস) ধরে নিয়ে আম গাছের ডালে পা ওপর দিকে করে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে মারধর করেন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। কুলসুম বেগম ও তার শাশুড়ি মামুনের হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরও মারপিট করেন। এ ঘটনায় শিশুটির মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় মামলা করেন।
নড়াইলের পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিশু হাবিব সুস্থ আছে। তার মায়ের মামলার ভিত্তিতে বাবা মামুন শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নির্যাতনের শিকার মা ও শিশুকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
সুত্রঃ ঢাকা পোষ্ট