জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রশিক্ষণ কমান্ডার মো. দিদার হোসেন ওরফে মাসুম ওরফে চাম্পাইসহ ৯ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বান্দরবান সদর উপজেলা টংকাবতী ইউনিয়নের এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জঙ্গিরা গত চারদিন আগে ওই এলাকায় আত্মগোপনে ছিল।
সোমবার সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেছেন, টংকাবতী ইউনিয়নের এলাকায় রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার মো. দিদার হোসেন ওরপে চম্পাইসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরি সরঞ্জাম ও ব্যবহার্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গত বছর ২৩ আগস্ট কুমিল্লার ৮ জন তরুণ নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। নিখোঁজের ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেশে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামটি চলে আসে। জঙ্গি দমনে গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে পার্বত্য এলাকায় বিশেষ করে বান্দরবানে র্যাব ধারাবাহিকভাবে অভিযান অব্যাহত রাখে। বিভিন্ন সময়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার অনেককে গ্রেফতার করেছে এই এলিট বাহিনী। পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর ছত্রছায়ায় নতুন জঙ্গি সংগঠনটির সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়। র্যাবের অভিযানে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির সামরিক প্রশিক্ষক কমান্ডারসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, পার্বত্য এলাকায় র্যাবের অভিযান শুরু হলে সংঠনের আমীর মাহমুদের নির্দেশে নিজেদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য রুমার রামজুদান থেকে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়। প্রথমে সাইজাম পাড়া, মুন্নুয়াম পাড়া, রোয়াংছড়ি, পাইক্ষ্যং পাড়া, তেলাং পাড়াসহ পাবর্ত্য অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে পাইন্দু খাল, ক্যাপলং পাড়া, দুর্নিবার পাড়া, রামধার পাড়া, ওয়াই জংশন হিল, ১৬ মাইল বাজার, ব্রিকফিল্ড বাজার এলাকা হয়ে টংকাবতী ইউনিয়ন এলাকায় আত্বগোপন করে। তারা সেখানে গত ৩-৪ দিন ধরে অবস্থান করছিল। অভিযান চলাকালীন সময়ে ঘটনাস্থল থেকে ৫-৬ জন জঙ্গি পালিয়ে যায়।
র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার মো. দিদার হোসেন, ওরফে মাসুম ওরফে চাম্পাই (২৫), মো. ইমরান হোসেন ওরফে শান্ত ওরপে সাইতোয়াল (৩৫)। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। আল আমিন সর্দার ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে বাহাই (২৯)। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সাইনুন ওরফে রায়হান ওরফে হুজাইফা (২১)। তার বাড়ি ঢাকায়। তাহিয়াত চৌধুরী ওরফে পাভেল ওরপে হাফিজুল্লাহ ওরপে রিতেং (১৯), মো. লোকমান মিয়া (২৩)। তাদের বাড়ি সিলেটে। ঝিনাইদহের মো. আমির হোসেন (২১), বরিশালের মো. আরিফুল রহমান ওরফে লাইলেং (২৮), ময়মনসিংহের শামিম মিয়া ওরফে রমজান ওরফে বাকলাই।
সুত্রঃ দৈনিক সমকাল