রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এক বিচারপতির ভাতিজিকে যৌতুকের টাকার জন্য পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম ফাতেমা নাসরিন (৪৫)। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ৮ মার্চ তাকে পিটিয়ে আহত করেন তার স্বামী। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১০ দিন পর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাত ১টার দিকে আগারগাঁও নিওরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফাতেমা। শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। ফাতেমার মৃত্যুর খবর শুনে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান সেই বিচারপতি।
পুলিশ বলছে, যৌতুকের দাবিতে তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এই অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। নিহত ফাতেমা নাসরিন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভাতিজি। এ ঘটনায় বড় বোন আরজিনা বেগম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় নিহতের স্বামী মির্জা সাখাওয়াত হোসেনকে (৪৯) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। মামলার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯ বছর আগে ফাতেমা নাসরিন ও মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের বিয়ে হয়ে। তাদের সংসারে ১৭ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। নাসরিনের বাবার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে তার নামে কিছু জমি রয়েছে। সেই জমি বিক্রি করে তার স্বামী তাকে এক কোটি টাকা আনতে বলেন। তার নামে থাকা জমিতে আরও অনেকের অংশ থাকায় সেটি বিক্রিতে জটিলতা আছে জানালে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নির্যাতন ও মারধর শুরু করেন। গত জানুয়ারিতে নাসরিন পঞ্চপড় সদর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলা করার পর গ্রেফতার হয়েছিলেন সাখাওয়াত। কিন্তু তিনি জামিনে বের হয়ে এসেই আবারও তার স্ত্রীকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। সর্বশেষ গত ৮ মার্চ মোহাম্মদপুরের বাসায় টাকার জন্য চাপ দিলে প্রতিবাদ করেন নাসরিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী রান্নাঘরে থাকা বাটার কাঠের মসলার বাটনা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। এতে তার মাথা থেতলে যায়। সর্বশেষ যখন সাখাওয়াত তার স্ত্রীকে দা দিয়ে জবাই করতে উদ্যত হয় তখন তাদের সন্তান এসে বাধা দেয়। পরে ফাতেমাকে দ্রুত উদ্ধার করে আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) তোফাজ্জল হোসেন জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন তারা। ফাতেমার স্বামীকে গ্রেফতারও করেছেন। পরে
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
সুত্রঃ ঢাকা মেইল
1 comment
সঠিক বিচার এবং দ্রুত বিচার না হওয়ার কারণেই আমাদের এই করুন দৃশ্যগুলো দেখতে হয়।