৩০ হাজার টাকা বেতনে সহযোগীর চাকরি দেয়া হয়। কিন্তু তাকে পুরো বেতন দেয়া হতো না। উপরন্তু হাত পা টেপানো হতো। এমনকি দুইবার তাকে বলাৎকারও করা হয়। এ নিয়ে তার মনে অনেক ক্ষোভ ছিলো নিহত মাওলানা জালাল উদ্দীন জালালীর সহযোগী হাফেজ হাসান আহমেদ ওরফে লাক্ষাতুরার।
এই ক্ষোভ থেকে মাওলানা জালাল উদ্দীনকে ছুরি ও বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন হাফেজ হাসান আহমেদ। নিহত মাওলানা কোন মাদরাসায় ছিলেন তা তাৎক্ষনিক জানাতে না পরলেও তিনি বিভিন্ন মাদরাসার হয়ে টাকা তুলতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে।
রূপনগর আবাসিক এলাকার ৩৩ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়ির ৬ তলায় পূর্ব পাশের ফ্লাটের দরজা ভেঙে পুলিশ মাওলানার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে পাশের ভবনের সিড়ির নিচ থেকে আটক করা হয় ঘাতক হাফেজকে।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় মাদরাসার খতিব আহসান উল্লাহ রূপনগর থানায় এসে খবর দেন, রূপনগর আবাসিক এলাকার ৩৩ নম্বর রোডের ওই বাড়ির ৬ তলাও ফ্লাটের ভাড়াটিয়া মাওলানা জালাল উদ্দীন জালালীর ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ, চাবি পড়ে আছে। ফ্ল্যাটের দরজার সামনে রক্তের দাগ, ডাকাডাকি করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি।
থানার ওসি সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান এবং হত্যার ঘটনাটি উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করেন। পরে উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশের ভবনের সিড়ির নিচ থেকে নিহতের সহযোগী হাফেজকে আটক করা হয়। তার জামা কাপড় ছিল রক্তামাখা এবং হাতেও রক্তের দাগ লেগে ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক হাফেজ জানান, তাকে ৩০ হাজার টাকা বেতনে সহযোগীর চাকরি দিলেও তাকে পুরো বেতন দিতো না, হাত পা টিপাতো, ২ বার তাকে বলাৎকারও করেছিলেন মাওলানা জালাল উদ্দীন। এ নিয়ে তার মনে অনেক ক্ষোভ ছিলো।
বৃহস্পতিবার ফজর নামাজের পর আনুমানিক ৫ টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে দিয়ে হাত পা টিপাচ্ছিলেন জালাল উদ্দীন। ওই সময় বেতনের টাকা চাইলে তিনি পুরো বেতন দিতে অস্বীকার করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাওলানাকে ছুরি ও বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন হাফেজ। ঘটনাস্থল থেকে ছুরি, বটি, মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
ডিসি জানান, নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছ। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে।
নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো ও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
সুত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল