বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক স্নাতকপড়ুয়া ছাত্রীকে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ সময় বাধা দিলে ওই ছাত্রীর মা ও বোনদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। গুরুতর অবস্থায় ওই ছাত্রীর মাকে উদ্ধার করে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৮ মে) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায়। এরপর থেকে অভিযুক্ত স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষক সাইদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। সাইদুল পাশের টেকিবাড়ী জামে মসজিদে ইমামতি করেন।
নিহত কলেজছাত্রী হলেন গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে রাবেয়া আক্তার। নিহত রাবেয়া ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন, রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা, মেয়ে হাবিবা, খাদিজা ও জান্নাত।
মাদ্রাসাশিক্ষক সাইদুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা মহেশতারা গ্রামে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমতি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে চাকরির সুবাদে সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে স্নাতকে ভর্তি হন। তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা, জান্নাতকে কুরআন শিক্ষা দিতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক সাইদুল ইসলামকে হাউস টিউটর হিসেবে নিয়োগ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, সাইদুল ইসলাম রাবেয়ার ছোট দুই বোনকে পড়ানোর সময় রাবেয়াকে পছন্দ করেন। কয়েকবার বিয়ের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যাত হন। পরে সাইদুলকে তাদের বাসায় ছোট দুই মেয়েকে পড়াতে যেতে নিষেধ করেন তার বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়াদের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে তার ডাক-চিৎকারে মা ও ছোট দুই বোন হাবিবা ও খাদিজা দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে দেখেন সাইদুল ইসলাম রাবেয়ার মাথা, গলা, হাত-পাসহ সারা শরীরে ছুরি দিয়ে কোপাচ্ছেন। তারা বাধা দিলে তাদেরও কুপিয়ে পালিয়ে যান সাইদুল।
পরে গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয়রা শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতেই চিকিৎসক তকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সুত্রঃ প্রতিদিনের বাংলাদেশ