ময়মনসিংহে সিরিজ বোমা হামলা মামলার আসামি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য আজিজুল হক গোলাপকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। সোমবার রাতে ভালুকা বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৮ বছর আত্মগোপনে থাকা গোলাপকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। র্যাব-১৪ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৪ অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।
র্যাব জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, মার্কিন দূতাবাস, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব ও সরকারি-আধা সরকারি স্থাপনায় সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ঘটনার দিন বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার প্রেসক্লাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রায় ৫০০ বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এই হামলায় নিহত হন ২ জন এবং আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ। সারা দেশের মতো সেদিন ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া মোড়, গাঙ্গিনার পাড় সিটি প্রেস ক্লাবের নিচে, পাটগুদাম চায়না ব্রিজের মোড়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্ট ভবন বার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ময়মনসিংহে এই বোমা হামলার ঘটনায় সদীপ (৩৫), রফিকুল ইসলাম টুটুল (১৭) ও হাফিজুর রহমান (২৫) নামে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার আজিজুল হক গোলাপসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১৪ অভিযান চালিয়ে জঙ্গি মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি আজিজুল হক গোলাপকে সোমবার রাতে ভালুকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গোলাপ গৌরীপুরের তাতিপায়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলী মাস্টারের ছেলে। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর ১৮ বৎসর ধরে পরিচয় গোপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিলেন তিনি। একটি ফ্যাশন হাউজে তিনি কর্মরত ছিলেন।
র্যাব অধিনায়ক জানায়, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শায়খ আব্দুর রহমান এবং সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই ও আজিজুল হক গোলাপসহ অন্যরা সিরিজ বোমা হামলার পূর্ববর্তী সময়ে নিয়মিত গোপন বৈঠক করতেন। ওই গোপন বৈঠকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখানো হতো। এছাড়া সন্ত্রাসী হামলার সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জ্ঞান প্রদানসহ, সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, গোলাপ গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। নিজের নাম-পরিচয় ঠিক রেখেই চাকরি করছিলেন।
সুত্রঃ সমকাল