বান্দরবানের দুর্গম থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য এবং দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অর্থের বিনিময়ে তাদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করছিল পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন-ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন–নোয়াখালীর নিজামুদ্দিন হিরন ওরফে ইউসুফ (৩০), কুমিল্লা জেলার সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা (২৭), সিলেট জেলার মো. সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন (৩০), কুমিল্লা জেলার মো. বাইজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াজ ওরফে বাইরু (২১,) কুমিল্লা জেলার এক কিশোর।
গ্রেপ্তারকৃত কিশোর কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ ৮ তরুণের একজন এবং সাদিকুর সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ তরুণের একজন।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছর ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজের ঘটনার পর র্যাব ফোর্স নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। ফিরে আসা একজনের তথ্যের ভিত্তিতে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাবাদে জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্তাল শারক্বীয়া নামে জঙ্গি সংগঠনের নাম জানতে পারে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, মাসিক ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে কেএনএফ।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে কুকিচিন (কেএনএফ) বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেছে।
গত বছরের ২০ অক্টোবর বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন জায়গা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৭ ও কেএনএফের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ করা হয় বলে জানায় র্যাব। তবে গতকালের অভিযানে কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি (হুজি), জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু সদস্য ২০১৭ সালে নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন শুরু করে। সংগঠনটি ২০১৯ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে।’
গ্রেপ্তারকৃত ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার তথ্যে আরও জানা যায়, এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণের সংখ্যা ৫৫।
গতকালের অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত ৫ জন ওই ৫৫ জনের অন্তর্ভুক্ত বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে কেএনএফের সঙ্গে জিহাদি উগ্রবাদীদের সম্পর্ক, অর্থযোগান ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অভিযানে এ পর্যন্ত যত জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রথম সারির নেতা ও কেএনএফের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে আর্থিক চুক্তিভিক্তিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হতো।’
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘অর্থ যোগানদাতাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে র্যাবের গোয়েন্দা টিম কড়া নজরদারি বজায় রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সময় অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
সুত্রঃ ডেইলি ষ্টার বাংলা