কুমিল্লার দেবিদ্বারের একটি আবাসিক মাদ্রাসা ইকরানগরী ইসলামিয়া ইউনুছিয়া। সেখানে পড়ালেখা করে ছাত্রীরা। রাত গভীর হলেই বাবা-মার ফোন কল এসেছে বলে ছাত্রীদের ডেকে নিতেন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ হাবিবুর রহমান। একেক সময় একেকজনকে ডেকে নিয়ে গোনাহের ভয় দেখিয়ে করতেন ধর্ষণ। ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীর বর্ণনায় উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ ঘটনা।
ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী বলে, ‘গভীর রাতে বাবা-মা কল দিয়েছে বলে হুজুর আমাকে নিচে ডেকে নিয়ে আসে। তারপর পাঠদানের জায়গায় নিয়ে খারাপ কাজ করে। নির্যাতন সইতে না পেরে চিৎকার করতে চাইলে হুজুর মুখ চেপে ধরে। আর বলে তোমার গোনাহ হবে। আমি অভিশাপ দিলে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে।’
দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইকরানগরী ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক হাফেজ হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীর স্বজনদের দাবি, ইকরানগরী ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সপ্তম ও পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে রাতে ডেকে হাফেজ হাবিবুর রহমান। ফোন কলের কথা বলে তাঁর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই ধর্ষণ করতেন। তাঁর নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে গত শনিবার মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসায় চলে আসে দুই ছাত্রী। পরিবারকে জানায় ধর্ষণের কথা। শনিবার রাতে হাফেজ হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর বাবা। রাতেই অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার আরেক কিশোরী বলে, ‘হুজুরের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য একাধিকবার আত্মহত্যার কথা ভেবেছি। আর সইতে না পেরে পালিয়ে বাসায় চলে এসেছি।’
মামলার বাদীর ভাষ্য, মেয়েকে হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেয়ের জীবনটাই নষ্ট করে দিয়েছে হুজুর। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন তিনি।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, মাদ্রাসার দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দুই কিশোরীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়
সুত্রঃদৈনিক সমকাল