ধর্ষণের মামলায় হয়েছে যাবজ্জীবন সাজা। পরবর্তীকালে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে বিয়েও করেন ধর্ষক। সেই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে উচ্চ আদালতে চান জামিন। ভিকটিমকে এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে ধর্ষকের জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।
কিন্তু জমি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সেই দলিল আগামী ১৬ জুলাই আদালতে দাখিলের আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত মাসে দেওয়া এই আদেশের অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী ইত্তেফাককে বলেন, বাদী হলফনামা দিয়ে বলেছেন যে আসামি জামিন পেলে তার কোন আপত্তি থাকবে না। তবে আমরা বলেছি যে, যিনি ভিকটিম তাকে এই আসামি বিয়ে করেছেন। এখন জামিন পেয়ে ওই আসামি যদি ভিকটিমকে তালাক দেয় তখন কি হবে। এ কারণে ওই নারীর নামে স্থাবর সম্পত্তি লিখে দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুর করলে আমাদের আপত্তি নাই। এরপরই ভিকটিমের নামে এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে আসামির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, জমি লিখে না দিলে জামিন বাতিলের আবেদন করব। তখন আদালত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
জানা যায়, আব্দুর রহিম রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আরএস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এক স্কুলছাত্রী (১৬) ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনার ৯ দিন পর ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় মামলা করা হয়। সেই মামলায় গত বছরের ২৯ নভেম্বর রহিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম ইসমাইল হোসেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত আসামি। একইসঙ্গে জামিন চাওয়া হয়। আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে আসামির স্ত্রীকে এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেয় আদালত। একইসঙ্গে জমি লিখে দেওয়া হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৬ জুলাই দিন ধার্য রেখেছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত আদেশে হাইকোর্ট বলেন, মামলার উপরোক্ত তথ্য ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের আইনজীবীদের দাখিল করা অঙ্গীকারনামার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আব্দুর রহিমকে তিন মাসের জন্য অন্তবর্তিকালীন জামিন দিচ্ছি।
তবে শর্ত হচ্ছে যে, আপিলকারী (আব্দুর রহিম) উপরোক্ত জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে উপরে বর্ণিত হিসাবে (জমি হস্তান্তর সম্পন্ন করে) একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। আপিলকারী উপরোক্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
সুত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক