আয়োজকদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মিস ইউনিভার্স ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকজন প্রতিযোগী। অভিযোগে তারা বলেছেন, ৩রা আগস্ট এই প্রতিযোগিতার ফাইনালের আগে তাদেরকে ‘বডি চেকের’ নামে শরীরের ওপরের অংশের পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়। এরপর তাদের ছবি তোলা হয়। আয়োজকরা তাদেরকে বলেছেন, তাদের শরীরের কোথাও কোন ক্ষতের দাগ আছে কিনা, কোনো ট্যাটু আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হবে। এ জন্য তাদের শরীর থেকে পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
একজন প্রতিযোগী বলেছেন, আমি মনে করি এর মধ্য দিয়ে আমার অধিকারকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাদের এই আচরণ আমাকে মানসিকভাবে আঘাত করেছে। আমি ঠিকমতো ঘুমাতে পারছি না। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া অন্য প্রতিযোগীদের পাশে রেখে মিডিয়ার কাছে এসব অভিযোগ করেন তিনি। স্থানীয় টেলিভিশন এ খবর প্রচার করার সময় তাদের মুখ অস্পষ্ট করে দেয়, যাতে কেউ তাদেরকে চিনতে না পারেন।
তাদের পক্ষে আইনি লড়াই করছেন আইনজীবী মেলিসা অ্যাংগ্রায়েনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি এমন তিনজন প্রতিযোগীর প্রতিনিধিত্ব করছেন। বলেছেন, একই অভিযোগ নিয়ে আরও অনেকে তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। এ অভিযোগের পর রাজধানী জাকার্তার পুলিশ একটি বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, তদন্ত করে দেখবে। একই সঙ্গে এই প্রতিযোগিতার আয়োজনকারী পপি ক্যালো বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে মিস ইউনিভার্স ইন্দোনেশিয়া অর্গানাইজেশন।
ওদিকে বৈশ্বিক মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশনও বিষয়টি দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বলেছে, যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে।
সাবেক মিস ইন্দোনেশিয়া মারিয়া হারফান্তি বলেছেন, দেশে শরীর তল্লাশি করা একটি সাধারণ ঘটনা। তবে প্রতিযোগীদের নগ্ন হতে বলা অস্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, আয়োজকরা মাঝেমধ্যে প্রতিযোগীদের শরীর চেকের অংশ হিসেবে ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ যাচাই করে।
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে একজন প্রতিযোগী বলেন, বন্ধ একটি রুমে নিয়ে তার শরীর চেক করা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন পুরুষও উপস্থিত ছিলেন। রুমটির দরজা পুরোপুরি বন্ধ ছিল না। বাইরে থেকে লোকজন ভিতরের দৃশ্য দেখতে পেয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় সুন্দরী প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদিত। এর ফলে রক্ষণশীল সমাজে যাতে আঘাত না লাগে সে চেষ্টা করে যান আয়োজকরা। ২০১৩ সালে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগী বিকিনি রাউন্ড বাতিল করা হয় এ কারণে।
উল্লেখ্য, এখন চলছে মিস ইউনিভার্সের ৭৩তম আয়োজন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ডে এই প্রতিযোগিতা বেশ জনপ্রিয়।
সুত্রঃ মানবজমিন