পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলায় ২৮ দিনের কন্যাসন্তানকে হত্যার দায়ে বাবা মো. জাকির হোসেন বয়াতীকে (৪১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
জাকির হোসেন বয়াতী বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার তারিকাটা গ্রামের মো. চাঁন মিয়া বয়াতীর ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সরদার ফারুক আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জাকির হোসেন বয়াতী দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গোবিন্দগুহকাঠী গ্রামের আকন বাড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেই সুবাদে ওই মসজিদের পাশের বাড়ির হনুফা বেগমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে হনুফা বেগম ও জাকির হোসেন বয়াতীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে দু’জনে ঢাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।
এরই মধ্যে হনুফা বেগম সন্তানসম্ভবা হলে তিনি বাবার বাড়ি চলে আসেন। ২০১৮ সালের জুনে হনুফা বেগম একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন।
সন্তানকে দেখতে একই বছরের ৫ আগস্ট জাকির হোসেন শ্বশুরবাড়ি আসেন। ওইদিন রাতে জাকির হোসেন তার স্ত্রী হনুফা বেগমকে শরীর ভালো থাকবে বলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। পরদিন ভোরে হনুফার মা তাদের ডাকতে এসে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় জাকির ও তাদের কন্যাশিশু ঘরে ছিল না।
একদিন পর (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে বাড়ির পুকুরে হনুফার চাচি মাসুদা বেগম ২৮ দিনের কন্যাশিশুর লাশ ভাসতে দেখেন। ঘটনার ৯ দিন পর ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট শিশুটির মা হনুফা বেগম বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় জাকির হোসেন বয়াতীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর জাকির হোসেন বয়াতী শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও প্রমাণাদি দেখে আদালতের বিচারক জাকিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
সুত্রঃ সমকাল