নেত্রকোনার কলমাকান্দায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মাদ্রাসাশিক্ষক মুফতি মনিরুল ইসলামকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন। এর আগে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিচয় দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় তাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, মুফতি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আনসারুল ইসলামের একজন বড় সদস্য। তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলেন। আটকের পর তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় গত বছরের ১৫ সেস্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাও রয়েছে। শনিবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
গ্রেফতার মনিরুল ইসলাম কলমাকান্দা উপজেলার পাঁচকাটা গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তবে সেখান থেকে প্রায় বছরখানেক আগে গ্রামে এসে বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিল করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম ফেনীর একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে মুফতি পাশ করেন। এর পর টঙ্গী এলাকায় একটি মাদ্রাসায় বেশ কিছু দিন শিক্ষকতা করেন। সেখান থেকে একটি অনলাইন পোর্টালে বছরখানেক চাকরি করেন। চাকরি ছেড়ে এক বছর আগে গ্রামে চলে আসেন। গ্রামে থেকে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল করতেন।
গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাসে তাকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। তবে তার পরিবারের দাবি, মনিরুলকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় তা জানানো হয়নি।
মনিরুলের বাবা জাকির হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে চারজন লোক এসে ঘরের দরজায় নক করেন। দরজা খুললে তারা গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দিয়ে মনিরুলকে ধরে বাইরে থাকা একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এ সময় তার ব্যবহৃত ফোনটিও নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বলা হয়, মনিরুলের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানা হবে। তথ্য জেনেই ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মনিরুল ইসলামের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। শনিবার বিকালে সিটিটিসি ইউনিটে খোঁজ নিয়ে জেনেছি। তিনি আনসারুল ইসলাম সংগঠনের একজন বড় নেতা।
সুত্রঃ দৈনিক যুগান্তর