কথা না শোনায় ফায়েজ হাওলাদার নামে ৮ বছরের এক মাদরাসার ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সোমবার ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
আহত ফায়েজ হাওলাদার মাদারীপুর সদর উপজেলার নয়াচর গ্রামের সবুজ হাওলাদারের ছেলে। আর অভিযুক্ত মাহাদী হাসান চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যারেট কেয়ার মাদরাসার নুরানী শিক্ষক। ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছে।
স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, সোমবার ভোরে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যারেট কেয়ার মাদরাসার নাযেরা বিভাগের শিক্ষার্থী ফায়েজকে ঘুম থেকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মাহাদী হাসান। এ সময় ফায়েজকে শ্রেণিকক্ষে উঠে দাঁড়াতে বলেন তিনি। শিক্ষকের কথা মতো না দাঁড়িয়ে শ্রেণিকক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে শিশুটি। একপর্যায়ে রাগান্বিত শিক্ষক মাহাদী হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিশু শিক্ষার্থী ফাইজকে গলা ধরে তুলে একটি আছাড় দেন। এতে ফাইজ ফ্লোরে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পায়। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিও দেন অভিযুক্ত শিক্ষক। পরদিন মঙ্গলবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ফায়েজকে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। পরে জানানো হয় স্বজনদের। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে শিশুটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে। শিক্ষকের আঘাতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না কোমলমতি শিশুটি। বুধবার রাতে তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করে চিকিৎসক।
বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুটির মা শ্যামলী আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে আলেম বানানোর জন্য আমি মাদরাসায় পড়াতে দিয়েছি। কিন্তু মাদরাসার হুজুর আমার ছেলেকে ভাল শিক্ষা না দিয়ে আছাড় মেরে নির্যাতন করেছে। আমি ওই মাদরাসা বন্ধসহ ওই হুজুরের বিচার চাই।’
শিশুটির চাচা মিলন হাওলাদার বলেন, ‘আগে জানতাম না ওই মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে। কিন্তু এখন শুনতেছি শুধু আমার ভাতিজাকেই নির্যাতন করেনি। এর আগেও অনেকে শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। আমি চাই অভিযুক্ত শিক্ষক মাহাদী হাসানের কঠোর শাস্তি। আমরা এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছি।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ ইমরুল কায়েস বলেন, ‘এই ঘটনার জন্য আমরা ইতোমধ্যে এলাকার মরুব্বিদের কাছে জানিয়েছি। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনে নেব। প্রয়োজনে এই শিক্ষার্থীর সব চিকিৎসার খরচ আমরা বহন করবো।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান জানান, বিষয়টি এরইমধ্যে জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সুত্রঃ চ্যানেল ২৪.কম