যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বিবিসি গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বের প্রভাবশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের তালিকায় সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিভাগে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস।
জান্নাতুল ফেরদৌস একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক। প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়েও কাজ করেন।
এ ছাড়া তিনি অগ্নিদগ্ধ নারীদের অধিকারের জন্য কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন ভয়েস অ্যান্ড ভিউজের প্রতিষ্ঠাতা। জান্নাতুল নিজেও একটি অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালে অগ্নিদুর্ঘটনায় তাঁর শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। বিবিসির তালিকায় স্থান পাওয়ায় খুব খুশি জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ ধরনের তালিকায় নিজের নাম দেখতে পারা সম্মানের। আমি খুবই আনন্দিত। তবে আজ খুব করে মনে পড়ছে নিজের সংগ্রামের দিনগুলোর কথা। তিল তিল করে লড়াই করে এত দূর আসতে হয়েছে আমাকে।
এই লড়াইয়ে পাশে যাঁরা ছিলেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি।’
দগ্ধ শরীরের কারণে বিভিন্ন সময় নানা কটু কথা শুনতে হয়েছে জান্নাতুলকে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বিয়ে করেননি বলে জানালেন জান্নাতুল। বললেন, এই সমাজে বিয়ে না করে একা থাকার এ সাহস জুগিয়েছেন তাঁর মা। মা সব সময় বলে এসেছেন, শুধু সামাজিকতা রক্ষার জন্য বিয়ে করার প্রয়োজন নেই।
জান্নাতুল ফেরদৌস তাঁর বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের কাছে আইভি নামে পরিচিত। তিনি প্রতিবন্ধীদের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা ১১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। জান্নাতুল ইংরেজি সাহিত্য ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
বিবিসির ২০২৩ সালের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকায় আরো রয়েছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনি, ব্যালন ডি’অর বিজয়ী ফুটবলার আইতানা বনমাতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিশেষজ্ঞ টিমনিট গেরু, নারীবাদী আইকন গ্লোরিয়া স্টেইনেম, হলিউড তারকা আমেরিকা ফেরেরা ও বিউটি মোগল হুদা কাতান। পাঁচটি বিভাগে এই ১০০ কৃতী নারীর নাম প্রকাশ করেছে বিবিসি। বিভাগগুলো হলো জলবায়ু বিষয়ে অগ্রপথিক, সংস্কৃতি ও শিক্ষা, বিনোদন ও খেলাধুলা, রাজনীতি ও আন্দোলন এবং বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি।
সুত্রঃ কালেরকন্ঠ