ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে নিজ কক্ষে পরামর্শের জন্য ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী। পরে উপাচার্য অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করবেন বলে জানান। অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসেও এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে উঠেছিল। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, নিজ ইনস্টিটিউটে সবাই নিরাপদ থাকে। স্যার যখন ইনস্টিটিউটে কক্ষে আমাকে ডাকেন তখন আমি যাই। ঘটনার দিন, উনার কথা অসংলগ্ন লাগলে আমি চলে যাওয়ার জন্য চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াই। তখন তিনি নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন। আমাকে যৌন নিপীড়ন করেন। তিনি বার বার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন, ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে আমি ভয়ে তার কক্ষ হতে দৌড়ে পালিয়ে যাই। এরপর উনি ফোন দেন ঘটনাটি যেন কাউকে না বলি। আমি আজকে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিই। আমি বিচার চাই।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষের সামনে গেলে স্যার আমাকে নিজে থেকে তার কক্ষে ডাকেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দু’একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। তিনি আমাকে নানারকমের সাহায্যের প্রলোভন দেখান এবং আমাকে বলতে থাকেন আমি যেন একা তার সাথে দেখা করি। বই নেই তার কাছে গিয়ে। তাছাড়া তার বিষয়ে বা তার সাহায্যের বিষয়ে যেন কাউকে কিছু না বলি। তিনি আমার সেল ফোন নাম্বার নেন, এক রকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন এবং যুক্ত হোন।
অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, ঘটনার পর তার রুমে থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী দেখেছেন। এরপর আমি এতোটাই ভয় পাই যে মেসে ফিরে যাওয়ার শক্তিও পাচ্ছিলাম না, তাই আমি ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। কিছু সময় পর আমাকে পুনরায় ফোন করে তার সাথে দুপুরের খাবার, হালকা নাস্তা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন। আমি মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে প্রচণ্ড ভয়ে গ্রামের বাসায় চলে যাই। যার কারণে আমি চলমান পাঠদান থেকে বিরত থাকি। এমন সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম ও ইনস্টিটিউটের পারিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম আজমের বক্তব্য নেওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইলে কল দেওয়া হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সুত্রঃ আরটিভি নিউজ