জঙ্গিবাদ আর পাকিস্তান দুটো শব্দ যেন সমার্থক। আর ২০২৩সালে পাকিস্তানে যতগুলি জঙ্গি হামলা হয়েছে তার হিসেব জানলে অবাক হয়ে যাবেন।
২০২৩ সালে পাকিস্তানে জঙ্গিবাদ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। মানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে গত ৬ বছর ধরে এমন হিংসার ঘটনা পাকিস্তানে আগে কখনও হয়নি। খাইবার পাখতুনখাওয়া, বালুচিস্তান এলাকাতেও এই ধরনের হিংসার ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (যেটা ইসলামাবাদেরই) তাদের রিপোর্ট অনুসারে সব মিলিয়ে ১৫২৪টি হিংসা সংক্রান্ত ঘটনা হয়েছে। ৭৮৯টি জঙ্গি হানা , জঙ্গি প্রতিরোধের ঘটনা হয়েছে পাকিস্তানে। এটা হল ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান।
এই সব ঘটনায় সব মিলিয়ে ১০০০ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্য়ে সুরক্ষা বাহিনীর লোকজনও রয়েছেন। আর এই পরিসংখ্য়ান গত ৬ বছরের হিসেবকেও টপকে গিয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে এই প্রথম এত হিংসার ঘটনা হল পাকিস্তানে। ২০১৮ সালে যত সংখ্যক হিংসার ঘটনা হয়েছিল তার থেকেও বেশি হয়েছে এবার ২০২৩ সালে।
এদিকে পরিসংখ্য়ানে উল্লেখ করা হয়েছে, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বালুচিস্তান প্রদেশ হল এই সব হিংসার ভরকেন্দ্র। এই হিংসার ৯০ শতাংশ ঘটনাই হল এই দুটি পয়েন্টে। এই সব জঙ্গি হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাঞ্জাব ও সিন্ধ প্রদেশে তুলনায় কিছুটা কম হিংসার ঘটনা হয়েছে। এই সমস্ত এলাকায় মাত্র ৮ শতাংশ হিংসার ঘটনা হয়েছে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে হিংসার পরিমাণ প্রায় ৫৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। গত ১০ বছরেও হিংসার পরিমাণ এইভাবে বাড়েনি। ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্য়া ছিল ৯৮০জন। আর ২০২৩ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়ে যায় ১৫২৪জন।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে এই হিংসার ঘটনার মধ্য়ে ৬৫ শতাংশই হল জঙ্গি হামলার ঘটনা। বাকি ৩৫ শতাংশ হল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বাহিনী যে অপারেশন করেছিল তারই ঘটনা।
সব মিলিয়ে এই রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, আগের বছর পাকিস্তানে ৫৮৬টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। তার মধ্য়ে ১৭ শতাংশ হানার জন্য নিষিদ্ধ গোষ্ঠী তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান, বালোচ লিবারেশন আর্মি সহ একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছিল।
এদিকে পাকিস্তানের সুরক্ষা বাহিনী সব মিলিয়ে ১৯৭টি অপারেশন করেছিল। সেই অপারেশনে ৫৪৫জন জঙ্গির মৃত্যু হয়। অন্যদিকে গত বছর ধর্মীয় জায়গাতেও একের পর এক হামলা হয়েছিল পাকিস্তানে। সেই সংখ্য়াটাও কম কিছু নয়। সব মিলিয়ে সেই হামলায় ২০৩জনের মৃত্যু হয়েছিল।
সুত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস