কুমিল্লার লালমাই উপজেলার সাধুর কলমিয়া তাহফিজুল কুরআনিল কারিম ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে মো. ইব্রাহিম (২২) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন ভূঁইয়াকে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার ঘটনাটি জানালে তিনি গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে ওই শিক্ষককে আনতে গেলে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ গ্রাম পুলিশের উপর হামলা করে। পরে গ্রাম পুলিশ ওই শিক্ষককে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মাহফুজ এর নির্দেশে এস আই মনির হোসেন তাকে গ্রেফতার করে।
আটক করা মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ইব্রাহিম ফেণী জেলার ফুলগাজি উপজেলার নুরপুর গ্রামের নুরুল আমিন এর ছেলে।
বেলঘর দক্ষিণ ইউপির সদস্য শাহাআলম জানান, প্রেমনল গ্রামের এতিম ছেলে (১০) মাদ্রাসার হেফজখানার নাজেরা শাখায় পড়াশোনা করত। গত শনিবার সকাল ১০ টায় শিক্ষক ইব্রাহিম তাকে কৌশলে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করে। পূর্বেও ৭/৮ আটবার বলাৎকার করার কথা জানান শিশুটি। এবিষয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সাইফুল ইসলামকে বারবার শিশুটি তার নির্যাতনের কথা জানালেও কোন প্রতিকার পায়নি। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ওই ছাত্র ফের একই ঘটনার স্বীকার হলে সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এসে বিষয়টি তার দাদাকে জানায়। দাদা স্হানীয় (ইউপি সদস্যকে) জানান। তিনি বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লালমাই থানায় খবর দেন। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠান পূর্বেও বলাৎকার সহ শিশু নির্যাতনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে ৷ এলাকাবাসীর অভিমত মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল ইসলাম এসব অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন বলে বারবার এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়। মাদ্রাসায় কোন ঘটনা ঘটলে তা ধামাচাপা দেয়ার জন্য রয়েছে তার নিজস্ব বাহিনী। তাদের কাজ হলো পেশি শক্তি বা অর্থের বিনিময়ে যেকোন ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া। এঘটনায় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখেন মাদ্রাসার দেওয়ালে থাকা সাইনবোর্ড সরিয়ে নিয়েছেন ।
লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লা আল মাহফুজ বলেন, ‘গ্রেপ্তার ইব্রাহীমকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তার ও ভুক্তভোগী শিশুর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া লালমাই থানায় মামলা নং-০৩ তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ধারা ৯(১)২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ সংশোধনী রুজু করা হয়।
সুত্রঃ কুমিল্লার কাগজ