উত্তেজিত জনতা ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসার ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাওলানা খলিলুল্লাহ্কে (২৭) নামে এক শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষক একই ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মো. লাল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর আগে কামালপুর গ্রামের লাল মিয়ার বড় ছেলে মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা স্থাপন করেন। সেখানে তার ছোট ভাই মাওলানা খলিলুল্লাহ্ মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ওই শিক্ষক মাদ্রাসার নূরানী শাখার এক ছাত্রকে কৌশলে তিনবার বলৎকার করে।
ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা মাইক্রোচালক মানিক মিয়া জানান, ‘আমি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পূর্বে ছেলেকে খাবার দিতে গেলে ছেলে আমাকে ডেকে নিয়ে বলে আব্বা হুজুর আমাকে খারাপ কাজ করে। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি অন্য ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলে সত্যতা পাই। তখন আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না। বাড়িতে গিয়ে ঘটনা জানালে এলাকার লোকজন এসে তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। তিনি আরও জানান, ঘটনা কাউকে বললে ছেলের জিহ্বা কেটে ফেলার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার এই কাজ করেছে এই চরিত্রহীন হুজুর।’ পরে মুহতামিম মাওলানা খলিলুল্লাহ্কে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তোপের মুখে স্বীকার করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা খলিলুল্লাহ্কে গণপিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রাখেন। নান্দাইল মডেল থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মাওলানা তাকে থানায় নিয়ে যায়।
নূরানী শাখার এক ছাত্রের অভিভাবক মো. আসাদুল্লাহ্ বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক এমন ঘটনা ঘটাবে তা কখনও চিন্তা করি নাই। এটি খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি, এ ছাড়া তো কিছু করার নেই।
ছাত্রের বাবা বলেন, ছেলেটিকে হাফেজ বানাবো বলে মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। ছেলে কান্নাকাটি করে বলেছে হুজুর আমার সাথে তিন দিন খারাপ কাজ করছে। আমি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলে সবাই বলছে হুজুর খারাপ কাজ করে। এর সঠিক বিচার চাই।
মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ বলেন- আমি তো মাদ্রাসায় থাকি না। আজকে মাদ্রাসায় আসলে ছাত্রের বাবা এসে ঘটনা বলছে। উত্তেজিত লোকজন ভাইকে মারধর করছে, এটুকুই জানি।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোন এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুত্রঃ দেশ রুপান্তর