ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলদারিত্বের মধ্যেই নিখোঁজ হওয়া নারী সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া রোশচিনার মৃত্যুর খবর দিয়েছে মস্কো। ২৭ বছরের এই নারী সাংবাদিক কারাগারে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। তবে তিনি কীভাবে মারা গেলেন বা কি করেই জেলে গেলেন, তার কিছুই জানায়নি রাশিয়া। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণমাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও রুশ দখলকৃত এলাকায় গিয়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত খবর প্রকাশ করে যাচ্ছিলেন ইউক্রেইনস্কা প্রাভদার সাবেক সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া।
এরইমধ্যে ২০২৩ সালের আগস্টে রাশিয়ান বাহিনীর দখলে থাকা ইউক্রেনের একটি এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ভিক্টোরিয়া রোশচিনা।
অনেক চেষ্টা করেও ভিক্টোরিয়ার পরিবার তার আর কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না। দীর্ঘ ১০ মাসের মাথায় চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে, ইউক্রেনীয় এক নারী সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে। যদিও আটকের কোনো কারণ জানায়নি রাশিয়া।
দুদিন আগে ভিক্টোরিয়া রোশচিনার বাবাকে একটি চিঠি পাঠায় মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে জানানো হয়, ভিক্টোরিয়া মারা গেছেন। মৃত্যুর তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর।
মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি নথি অনুযায়ী, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের লাশ বিনিময়ের সময়ে একজন সাংবাদিকের লাশ ফেরত দেওয়া হবে।
লাশটি ভিক্টোরিয়ার। তবে মৃত্যুরও কোনো কারণ জানায়নি রাশিয়া।
ভিক্টোরিয়ার এমন মৃত্যুর খবরে শোকাহত ইউক্রেনের সাংবাদিক সমাজ। এরইমধ্যে শনিবার সাবেক সহকর্মী ও বন্ধুরা ভিক্টোরিয়াকে স্মরণ করতে জড়ো হন মধ্য কিয়েভের একটি ময়দানে। তাদের হাতে ধরা ছিল ভিক্টোরিয়ার ছবি।
সহকর্মীরা আক্ষেপ করে বলেন, মে মাসের দিকে জানা গেল দক্ষিণ রাশিয়ার তাগানরোগের ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি রয়েছেন ভিক্টোরিয়া। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেও তাকে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন মুক্তি পাওয়া বন্দিদের একজন।
মিডিয়া ইনিশিয়েটিভ ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্যমতে, তাগানরোগ থেকে গত মাসে মুক্তি পাওয়া এক ইউক্রেনীয় নাগরিক ভিক্টোরিয়ার পরিবারকে জানিয়েছে- তিনি ৮ বা ৯ সেপ্টেম্বর ভিক্টোরিয়াকে কারাগারে দেখেছেন।
ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, ১৩ সেপ্টেম্বরের দিকে মুক্তি পেতে পারেন ভিক্টোরিয়া। তিনি তেমনই শুনেছেন। তবে সেপ্টেম্বর পেরিয়ে অক্টোবরের জানা গেল ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর খবর।
তাগানরোগ কারাগারটি বন্দি ইউক্রেনীয়দের নৃশংস নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। অনেকে কারাগারটিকে ‘রাশিয়ান গুয়ানতানামো’ বলে আখ্যা দিয়ে থাকে।
সুত্র: ঢাকা টাইমস