খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) তথ্য অনুযায়ী, গেলো বছর গড়ে প্রতি মাসে ১৮টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা বারবার ঘটার অন্যতম কারণ হিসেবে বিলম্বিত বিচার এবং অপরাধ করে পার পাওয়ার সংস্কৃতিকে দায়ী করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
আগের বছর (২০২২ সালে) ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৭২টি। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১৫। আর চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে খুলনায় যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২১টি।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ১৬, ফেব্রুয়ারিতে ১২, মার্চে ১১, এপ্রিলে ৭, মে মাসে ২১, জুনে ১৬, জুলাই মাসে ১০, আগস্টে ১৪, সেপ্টেম্বরে ১৮, অক্টোবরে ১৭, নভেম্বরে ১৩ এবং ডিসেম্বরে ১৭ জন যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন; গড়ে দুদিনে একজন।
২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে ১৭, ফেব্রুয়ারিতে ১৬, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ১২, মে মাসে ১৯, জুনে ১৩, জুলাই মাসে ২১, আগস্টে ২৩, সেপ্টেম্বরে ২৯, অক্টোবরে ১৪, নভেম্বর ১৭ এবং ডিসেম্বরে ১৭ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; গড়ে দেড় দিনে বা ৪০ ঘণ্টায় একজন।
পরিসংখ্যান আরও বলছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়েছে এসব ঘটনা।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যে পরিমাণ যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে ওসিসিতে তার অর্ধেকও আসে না। অপরাধীদের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা, সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়, থানা-পুলিশ বা আইন-আদালতের ঝামেলাসহ বিভিন্ন কারণে অনেক ভুক্তভোগী মামলা করতে চান না।
এ বিষয়ে সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষকরা বলেন, নৈতিক অবক্ষয়, বিচারিক দীর্ঘসূত্রতা ও প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে এমন ঘটনা।
অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান তালুকদার রাসেল মাহমুদ বলেন, ১৮০ দিনের মধ্যে নারী নির্যাতনের বিচার সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা হয় না। এক্ষেত্রে বিচারিক বিলম্ব অপরাধ বাড়তে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। অপরাধীদের দ্রুত সময়ে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে এ ধরনের অপরাধ কমবে।
সুত্র সময়ের খবর