পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ বা পিআইসিএসএস-এর হিসাব বলছে, এ বছরের প্রথম আট মাসে জঙ্গি হামলায় ৭৫৭ জন মারা গেছেন৷ এর মধ্যে শুধু আগস্ট মাসেই প্রাণ হারান ২৫৪ জন৷ গত ছয় বছরের মধ্যে কোনো এক মাসে মৃত্যুর এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা৷
খাইবার পাখতুনখা ও বেলুচিস্তান প্রদেশে জঙ্গিরা সবচেয়ে বেশি সক্রিয়৷ দুটি প্রদেশই আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত৷
পাকিস্তানের ভেতরে হামলার জন্য আফগানিস্তান ভিত্তিক তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপিকে বারবার দায়ী করে আসছে ইসলামাবাদ৷ তবে কাবুলের তালেবান সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
বেলুচ লিবারেশন আর্মি বা বিএলএ নামের আরেকটি গোষ্ঠী বেলুচিস্তানের জন্য বড় জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়ায় আফগান তালেবানকে সতর্ক করলো পাকিস্তানহুমকি হয়ে উঠেছে৷ বিএলএ বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা চাইছে৷ তারা ঐ প্রদেশে বাস্তবায়িত হতে থাকা চীনের প্রকল্পগুলোরও বিরোধিতা করে৷
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ক্রমে অনিরাপদ হয়ে উঠছে৷
সাম্প্রতিক হামলাগুলোর জন্য রাষ্ট্রের অবহেলাকে দায়ী করেছেন দ্য খোরাসান ডায়রির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইহসানুল্লাহ টিপু মেহসুদ৷ নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের একটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে দ্য খোরাসান ডায়রি৷ ডিডাব্লিউকে মেহসুদ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রের অবহেলাই মূল কারণ৷ সামরিক অভিযানের মাধ্যমে জঙ্গিদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার পর যে লাভ হয়েছে তা রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷”
‘‘আফগানিস্তানের আশরাফ গনি সরকারের সঙ্গে মিলে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷ সে কারণে টিটিপি শক্তি বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছ,” বলে মনে করেন মেহসুদ৷
সাবেক কূটনীতিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশ্লেষক মালিহা লোধি মনে করেন, সহিংসতার বিরুদ্ধে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে তালেবান সরকার৷ ‘‘পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা বাড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে৷ টিটিপির লাগাম টেনে ধরতে তালেবান কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতি একটি প্রধান কারণ,” বলে মনে করেন তিনি৷
জুলাই মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিটিপি আফগানিস্তানের ‘সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’৷ পাকিস্তানে হামলা করার জন্য তারা কাবুলের তালেবান সরকারের কাছ থেকে বিপুল সহায়তা পায় বলেও ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷
সুত্রঃ ডিডাব্লিউ