ধর্ষণের পাশাপাশি হাতুড়ি দিয়ে নিয়মিত মারধর করতেন। পুরো শরীরে ঢেলে দিতেন গরম পানি। কখনো গলায় ছুরি ধরে হত্যার হুমকিও দিতেন। দেড় বছর ধরে এভাবে এক নারীকে নির্যাতনের দায়ে সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আদালত। দণ্ডিত ফারনাজ ফারাবি নামের ২৮ বছরের ওই তরুণ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তিনি থাকতেন ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রি শহরে। আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে তাঁর।
যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশের ওয়েবসাইটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর সহকর্মীরা তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। এরপর তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানান। নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশের জনসুরক্ষা শাখা। তদন্তে দেখা যায়, ওই নারীর একটি হাত ও পায়ের গোড়ালি ভাঙা। নাক ভেঙে গেছে। শরীরে নানা অংশে একাধিক বড় ক্ষতচিহ্ন।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্ত ফারনাজ ফারাবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও প্রথমে তিনি নির্যাতনের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে আদালতে তোলা হলে ওই নারীকে ধর্ষণ ও মারধর করার কথা স্বীকার করেন ফারনাজ ফারাবি। অভিযোগ প্রমাণিত এবং অপরাধের দায় স্বীকার করে নেওয়ার পর ১১ ডিসেম্বর তাঁকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেন স্থানীয় একটি আদালত।
ঘটনাটি তদন্তে নেতৃত্ব দেন পুলিশ কর্মকর্তা এলিজ বারবিজ। তিনি বলেন, ‘একজন নারীকে দীর্ঘ সময় ধরে ভয়ংকরভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। ওই নারীকে যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তা ভয়াবহ। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে দেওয়া হয়েছে। এসব স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় ক্ষত। এখন তাঁকে একটি নিরাপদ পরিবেশে রাখা হয়েছে। মানুষজনের সাহায্য নিয়ে চলতে হচ্ছে তাঁকে।’
ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে আমরা পৃথক একটি ডেস্ক চালু করেছি। বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মকর্তারা এই ডেস্কের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। অভিযোগ দেওয়ার জন্য এই ডেস্কের কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলারও সুযোগ আছে। কেউ পারিবারিক নির্যাতন-সহিংসতার শিকার হলে আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
সুত্র: প্রথম আলো