আবারও আন্তর্জাতিক খবরের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে বুধবার চালানো সন্ত্রাসী হামলা আইএস অনুপ্রাণিত বলে মনে করছে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই। হামলায় এ পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নতুন বছরের প্রথম প্রহর ভোর ৩টার দিকে বুধবার লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্স শহরের মানুষজন যখন উদযাপনে ব্যস্ত, তখন জনবহুল বোরবন স্ট্রিটে নৃশংস হামলা চালান সাবেক এক মার্কিন সেনা। প্রথমে মানুষজনের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেন তিনি। এরপর ট্রাক থেকে নেমে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকেন। পুলিশও পাল্টা গুলি চালিয়ে তাকে নিরস্ত করে। এ ঘটনায় জখম হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ জন।
এরই মধ্যে হামলাকারীর পরিচয় জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। সংস্থাটি বলেছে, মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য ৪২ বছর বয়সি হামলাকারীর নাম শামসুদ-দিন-জব্বার। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রে, থাকতেন টেক্সাসে। ওই ব্যক্তির ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীতে চাকরির মানসিক চাপ কিংবা সন্ত্রাসবাদীদের অনলাইন প্রচারণার ফাঁদে পড়ে তিনি সন্ত্রাসবাদে ঝুঁকতে পারেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নববর্ষ উদযাপনের সময় রাত সোয়া ৩টার দিকে যে ট্রাক চালিয়ে তিনি মানুষ চাপা দিয়েছেন, তাতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা পাওয়া গেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে দৃশ্যপটে ফিরিয়ে আনছে। এফবিআইয়ের ভাষ্য, বোরবন স্ট্রিটে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করেন জব্বার। তা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তিনি আইএসের রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন এবং তার খুন করার ইচ্ছা ছিল। এ ব্যাপারে প্রাক্তন এফবিআই এজেন্ট এবং সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ মার্ক জনসন মন্তব্য করেছেন, আইএসের মতো গোষ্ঠীগুলো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থেকে সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করছে। নিউ অরলিন্সের হামলাকারীর প্রোফাইল এ ধরনের প্রভাবের উদাহরণ হতে পারে।
এই হামলার ঘটনাটি গভীর উদ্বেগের এবং এটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে; বিশেষ করে যখন আইএসআইএস বা অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রভাবের কথা ওঠে। লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্সে ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনাটি একদিকে যেমন মার্কিন জমিনে সন্ত্রাসবাদী হামলার নয়া সূচনা, তেমনি এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কিছু দুর্বলতারও প্রকাশ। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক সুসান মিলার উল্লেখ করেছেন, আইএসের পতাকা প্রদর্শন এবং তাদের নামে হামলা চালানো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির প্রভাব এখনও বিদ্যমান থাকার ইঙ্গিত দেয়। তবে এখানে তাদের সংগঠিত উপস্থিতির চেয়ে মতাদর্শিক প্রভাবের প্রতিফলন বেশি।
সুত্রঃ সময়ের আলো