হোলি আর্টিজানে হামলার ৯ বছর পূর্তির দিনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বলেছেন, “বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নাই। বাংলাদেশে আছে ছিনতাইকারী।” অথচ একই দিনে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, “জঙ্গি নেই – এ কথা বলা যাবে না।” জামিনে মুক্ত জঙ্গিদের প্রসঙ্গও এসেছে তার বক্তব্যে৷ সম্প্রতি জঙ্গি নেটওয়ার্কে জড়ানোর অভিযোগে ৩৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও প্রচার পেয়েছে৷
মঙ্গলবার (১ জুলাই) হোলি আর্টিজানে হামলার ৯ বছর পূর্তির দিনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘‘জঙ্গি নাই, এখন ঠেকাতে হবে ছিনতাই। জঙ্গি থাকলে না জঙ্গি নিয়ে ভাববো? আওয়ামী লীগের সময় জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ছেলেপেলেদের মারছে …. কিসের জঙ্গি?”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর এমন বক্তব্যের পরই পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “জঙ্গি নেই – এ কথা বলা যাবে না। তবে এই মুহূর্তে তাদের খুব বেশি তৎপরতা নেই। যারা জামিনে ছাড়া পেয়েছে, তারা আমাদের সার্ভিলেন্সের মধ্যে আছে।”
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থানের সময় জেল ভেঙে পালানো জঙ্গিদের সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ প্রধান বলেন, “বিগত সরকারের সময় গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই জঙ্গি ছিল, আবার অনেককেই ট্যাগ দিয়ে জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। দুই ধরনেরই ছিল। তাদের সবার তথ্য আমাদের কাছে নেই। আমরা তাদের সন্ধান করছি।”
‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে হিযবুত তাহরীরের পোস্টার এবং ‘হোলি আর্টিজান বর্ষপূর্তি’র আনুষ্ঠানিকতা
২০১৬ সালের পহেলা জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার সময় জিম্মি করা মানুষদের উদ্ধার করতে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান৷ তাদের স্মরণে গুলশান থানায় একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের অধিকাংশ থানায় হামলা, ভাংচুর ও আগুন দেওয়ার খবর আসতে থাকে। তখন গুলশান থানার ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পোস্টার লাগানো হয়।
গত ৭ মার্চ আগাম ঘোষণা দিয়ে ঢাকার পল্টন মোড়ে হিজবুত তাহ্রীর মিছিল বের করে৷ এক পর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে৷ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়৷
হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর নিহত পুলিশের সহকারি কমিশনার রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’-এ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাতেন ঊধ্বর্তন পুলিশ কর্মকর্তারা। এবার তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের যে বাড়িটিতে বেকারিটি ছিল, সেই ৫ নম্বর বাড়িতে প্রতি বছরের ১ জুলাই ইতালি, জাপান ও মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা জানানোর রেওয়াজ চালু হয়েছিল। তবে এবার এ ধরনের কোনো কর্মসূচি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমান।
হোলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ড : যার দায় স্বীকার করেছিল আইএস
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশান-২-এ হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় বাংলাদেশেরই পাঁচ তরুণ। গুলি চালিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে তারা। নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানের, একজন ভারতীয়, দুজন বাংলাদেশি, একজন বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান নাগরিক ছিলেন। এর বাইরে হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। সেই রাতেই এর দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের ছবিও প্রকাশ করে তারা৷ তবে তখনকার সরকার আইএসের দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছিল, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি হামলার জন্য দায়ী।
হোলি আর্টিজানে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রুদ্ধশ্বাস সংকটের অবসান ঘটে।
এখন যেমন…
২০২৪ সালের ১ জুলাই পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-র তৎকালীন প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, “হোলি আর্টিজানের ঘটনার পর জঙ্গি দমনে সফলতা এলেও এর বীজ রয়ে গেছে।”
এক বছর বাদে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জঙ্গি দমনে এখন কোনো উদ্যোগ তাদের আছে কিনা৷ জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জঙ্গি নাই, এখন ঠেকাতে হবে ছিনতাই। জঙ্গি থাকলে না জঙ্গি নিয়ে ভাববো?”
কমিশনার ‘জঙ্গি নাই’ বললেও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বর্তমান প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. মাসুদ করিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “দেশে বর্তমানে জঙ্গি হামলার বড় কোনো ঝুঁকি নেই। তবে স্থিতিশীল অবস্থা ধরে রাখতে নজরদারি চলছে। অনলাইনে তৎপরতা নিয়ে নজরদারি আছে।”
গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত জঙ্গির সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিল হাইকোর্ট। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এই রায় ঘোষণা করেন আদালত। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই রায় দেয়। রায়ে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়, যা অনাদায়ে তাদের আরো ৫ বছর কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া বিচারিক আদালতের অন্যান্য ধারায় দেওয়া দণ্ডগুলো বহাল থাকবে এবং একইসঙ্গে চলবে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আব্দুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। এরা সবাই কারাগারে আছেন।
দ্বৈত বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান রায় পড়ে শোনান। ডেথ রেফারেন্স রায়ে সাজা কমানোর যুক্তি দেখাতে গিয়ে বিচারক সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬ ধারা ব্যাখ্যা করেন। এ আইনের ৬(১)(ক)(আ) ধারায় ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে বিচারক বলেন, “এ ধারার অপরাধে আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। কিন্ত বিদেশি নাগরিক হত্যাসহ রাষ্ট্রের দুর্নাম ঘটানোর মতো অপরাধ সংঘটন করায় তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যতদিন তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু না হবে, ততদিন তারা কারাগারে থাকবেন।”
ওই হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার রায়ে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায়ে সাতজনকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছিলেন। আরো দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়ে বিচারক তার রায়ে বলেন, ‘‘হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে আসামিরা ‘জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। সাজার ক্ষেত্রে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না।”
তবে মঙ্গলবার ঢাকা মেট্টোপলিটন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী ডয়চে ভেলেকে বলেন, “সরকারের নির্দেশে আমরা জঙ্গিদের মামলার একটা তালিকা করেছি। ওই তালিকায় থাকা মামলাগুলো আমরা শক্তভাবে মোকাবেলা করবো, যাতে আসামীরা কোনোভাবে পার পেয়ে যেতে না পারে।”
জেল পালানো ও জামিনে মুক্ত জঙ্গি এবং লুট হওয়া অস্ত্রের কথা
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের ৫ হাজার ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু এখনো ১ হাজার ৪১৯টি লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এছাড়া লুট হওয়া ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬০৯টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদের মধ্যে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫৬টি গোলাবারুদ উদ্ধার হলেও ২ লাখ ৬৩ হাজার ১৫৩টি গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি।
মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশি
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি নেটওয়ার্কে জড়ানোর অভিযোগে ৩৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম দ্য স্টার ও দ্য ভাইবস-এর খবর অনুযায়ী, গত ২৪ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে। ওই দেশের সরকার জানিয়েছে, এই ব্যক্তিরা মালয়েশিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মতাদর্শ প্রচার করছিলেন। পাশাপাশি তাদের কমিউনিটির (যাদের সঙ্গে থাকেন) ভেতরে সদস্য সংগ্রহের সেল গঠন করেছিলেন। তাদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, “যদি দেশে জঙ্গি না-ই থাকে, তাহলে মালয়েশিয়াতে তারা গ্রেপ্তার হলো কিভাবে? মালয়েশিয়া সরকারের কি এ নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই? আমরা তো ওদের মিডিয়া থেকে এ-ও জানলাম যে, গ্রেপ্তার ৩৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের অপরাধ একটু কম, তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে। আর ২১ জনের বিচার ওরাই (মালয়েশিয়া) করবে। অর্থাৎ, এরা অনেক বেশি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। শোনেন, অনেক কথাই বলা যায়, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। হোলি আর্টিজানের ঘটনার কয়েকদিন আগে তৎকালীন র্যাব প্রধান বেনজির আহমেদ খুব দম্ভ করে বলেছিলেন, ‘আমরা জঙ্গিদের কোমর ভেঙে দিয়েছি। শক্ত কোনো অভিযান পরিচালনা করার সামর্থ্য তাদের নেই।’ সবগুলো মিডিয়াতে তার এই বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। এরপর কী হয়েছে সবাই দেখেছে। ফলে জঙ্গিবাদ নিয়ে দম্ভ করার কিছু নেই। পুলিশ কমিশনার যেটা বলেছেন, সেটা যদি সত্যি হয়, তাহলে তো আমাদের সবার জন্যই সেটা ভালো। কিন্তু ব্যত্যয় ঘটলে কী হবে?”
জঙ্গিবাদের সূচকে কিছুটা উন্নতি
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের ৩ ধাপ উন্নতি হয়েছে। এ বছরের ৫ মার্চ সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি)-এর বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক বা জিটিআই ২০২৫ প্রকাশ করে। এবার সন্ত্রাসবাদের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। স্কোর ৩.০৩। আগের বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩২তম। এবার দক্ষিণ এশিয়ায় সূচকে সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দক্ষিণ এশিয়ায় খারাপের দিক থেকে শীর্ষে অবস্থানে আছে পাকিস্তান, দ্বিতীয় স্থানে আফগানিস্তান ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, জঙ্গিবাদের বিস্তার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। অনেক ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বা আঞ্চলিক প্রভাব জঙ্গিবাদে বড় ভূমিকা রাখে। এ জন্য বাংলাদেশ বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় আছে তা বলার সুযোগ নেই। কারণ, অনলাইনে এখনো উগ্রবাদ প্রচারের তৎপরতা রয়েছে।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-র প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. মাসুদ করিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “অনলাইনে যারা তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা আমাদের নজরদারির মধ্যে আছে।”
গুম সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম গত ১৯ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে একটি বাস্তব হুমকি৷ বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজানে হামলার মতো ঘটনা এর প্রমাণ। তবে এই হুমকি মোকাবেলায় রাষ্ট্রের সততা, মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় অটল থাকা জরুরি। সরকার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণাকে যখন রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, তখন তা আইনের শাসন, প্রতিষ্ঠান ও জনগণের বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়।”
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন ডয়চে ভেলেকে বলেন, “৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর প্রকৃতপক্ষে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত এমন অনেকেই জামিনে মুক্ত বা বিভিন্নভাবে ছাড়া পেয়েছেন। তাদের ওপর নজরদারিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শৈথিল্য দেখছি। এটা বেশি দিন চলতে দেওয়া ঠিক হবে না। এ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব না দিলে সেটা পরে বড় বিপদের কারণ হতে পারে।”