কাশ্মীরের পহেলগামে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর নৃশংস হামলার জেরে উপত্যকায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। গত শনিবার গভীর রাতে শ্রীনগরের দাচিগাম ন্যাশনাল পার্ক সংলগ্ন লিদওয়াস বনাঞ্চলে অপারেশন মহাদেব-এর আওতায় চালানো যৌথ অভিযানে তিন পাকিস্তানি লস্কর-ই-তৈয়বা জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন হামলার মূল হোতা সুলেমান শাহ। তিনি পাকিস্তানের নাগরিক ও লস্করের আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন। অন্য দুই জঙ্গি আবু হামজা ও ইয়াসিরও সম্প্রতি সীমান্ত পেরিয়ে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করেন এবং পহেলগাম হামলায় জড়িত ছিলেন বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
অভিযানে সেনা, সিআরপিএফ ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ দল অংশ নেয়। সেনা সূত্র জানায়, অভিযানের সময় পাহাড়ি জঙ্গলে নজরদারির জন্য একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। তীব্র লড়াই শেষে ঘটনাস্থল থেকে একে-৪৭ রাইফেল, পাকিস্তানি অস্ত্র, জিপিএস ট্র্যাকার ও উপত্যকার মানচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজি) আর.আর. স্বাইন এক বিবৃতিতে বলেন, এটি কেবল শুরু। পহেলগাম হত্যাকাণ্ডের প্রতিটি দোষীকে খুঁজে বের করে বিচার করা হবে। উপত্যকাকে জঙ্গিমুক্ত করাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১১টার দিকে দাচিগামের উঁচু এলাকায় সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহল চলাকালে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ করা হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় তীব্র বন্দুকযুদ্ধে। সেনা ও পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে, নিহত তিনজনই পাকিস্তানি নাগরিক এবং বৃহত্তর জঙ্গি অনুপ্রবেশ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাশ্মীরে এসেছিল। মৃতদেহগুলোর ছবি প্রমাণ হিসেবে ড্রোন নজরদারির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেগুলো সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া দুই জঙ্গি আশ্রয়দাতার সামনে দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিতের কাজ চলছে।
অভিযান চলাকালে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। নিরাপত্তা রক্ষার্থে দাচিগাম সংলগ্ন এলাকাজুড়ে কড়া নজরদারি আরোপ করা হয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন