শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার বিশাকুড়ি এলাকা থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির (১৯) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত শনিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় ডামুড্যা থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বাড়ির সামনে থেকে আটক করে। পরে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি দল গভীর রাতে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ জব্দ করে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম জানান, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আফতাব উদ্দিন স্বীকার করেছেন, তিনি অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী কনটেন্ট দেখে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি নিজ উদ্যোগে (সেলফ মোটিভেটেড) এই পথে আকৃষ্ট হন এবং নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আফতাব কীভাবে এবং কার মাধ্যমে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন, কিংবা তার পেছনে কোনো সংগঠনের মদদ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।”
গ্রেপ্তার আফতাব ডামুড্যা উপজেলা সদরের পূর্ব ডামুড্যা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এবং চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার বাবা আব্দুল মালেক হাওলাদার স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, যিনি কয়েক বছর আগে মারা যান। আফতাব তার মা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে ডামুড্যা থানা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরত্বে নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন।
ঘটনার পর তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রবিবার (২৮ জুলাই) ডামুড্যা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন মিয়া বাদী হয়ে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আফতাবকে শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, “আফতাবকে আটক করার পর তার বাড়ি তল্লাশি করে বিস্ফোরক তৈরির কিছু উপাদান পাওয়া গেছে। আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তার বক্তব্য এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”
সুত্রঃ মানবকন্ঠ