ডুমুরিয়ায় আলোচিত জিয়েলতলা মহামায়া আশ্রমের কথিত ধর্মগুরু নারায়ণ চন্দ্র রায় ওরফে গোসাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৫ বছর বয়সী এক কন্যা শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বুধবার ভোরে আশ্রম প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে জিয়েলতলা গ্রামের মৃত হরিপদ রায়ের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা জানান, কদমতলা গ্রামের এক কন্যা শিশু ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় জিয়েলতলা গ্রামের নারায়ন চন্দ্র রায়কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত ১৬ জুলাই আশ্রমের পাশের গ্রাম কদমতলা এলাকায় এক ভক্তের আহ্বানে তাদের বাড়িতে পারিবারিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যান নারায়ণ গোস্বামী। তিনি সেখানে রাত্রী যাপন করেন। সেখানে রাত ৩টার দিকে গোসাই শিশুটির সাথে অনৈতিক কাজের জন্য বল প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠলে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য গোসাই মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখান।মেয়েটির বাবা বলেন, ঘটনার পর থেকে মেয়ে আমাদের সাথে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনার ৩দিন পর মেয়ে সব কিছু খুলে বলে। পরে আজ বুধবার থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃত নারায়ন চন্দ্র রায় একটি আশ্রমের ধর্মগুরু এবং ভিকটিমের পরিবারের পূর্ব পরিচিত। সে এলাকায় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। ভিকটিমের চাচী অসুস্থ্য থাকায় গত ১৬ জুলাই রাতে নারায়ন চন্দ্র রায় ভিকটিমের অসুস্থ্য চাচীকে দেখতে যায়।এর প্রেক্ষিতে ভিকটিমের পরিবার ঘরোয়াভাবে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শেষ হতে অনেক রাত হওয়ায় ভিকটিম উক্ত বসতঘরের মাঝের রুমের ফ্লোরে ঘুমিয়ে পড়ে। ভিকটিম ফ্লোরে ঘুমিয়ে পড়ায় এবং রাত অনেক হওয়ায় তাকে রুমে রেখে সবাই যার যার রুমে চলে যায় এবং গ্রেফতারকৃত নারায়ন চন্দ্র রায় উক্ত ঘরের খাটের উপর ঘুমিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ঐ রাতেই মধ্যবর্তী সময়েনারায়ন চন্দ্র রায় সুযোগ বুঝে ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু ভিকটিমের ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্যর্থ হয়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়ার জিয়েলতলা মহামায়া আশ্রমের কথিত ধর্মগুরু নারায়ণ চন্দ্র রায় ওরফে গোসাই চিকিৎসার নামে প্রতি মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজ বাড়িতে আসর বসান। সেখানে নারী-পুরুষ এক সঙ্গে রাতভর গাজনাসহ নানা ধরণের অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তার কথিত চিকিৎসার অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আর নারায়ণ চন্দ্র রায় ওরফে গোসাই মানুষের অসুস্থতার সুযোগে অর্থ বাণিজ্য করেন।
এ অবস্থায় দাবি উঠেছে, তার কথিত চিকিৎসার বৈধতা প্রশাসনের খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টার আর কোন অভিযোগ আছে কিনা-সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
সুত্র: দৈনিক প্রবাহ