মাদারীপুর সদর উপজেলার ছোট দুধখালী গ্রামের যুবক ফয়সাল মোড়ল পাকিস্তানে গুলিতে নিহত হয়েছেন। দেশ ছাড়ার সময় তিনি দুবাই যাওয়ার কথা বললেও পরবর্তীতে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘তেহরিক-ই-তালিবান’-এ যোগ দেন। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফয়সালের মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারে চলছে গভীর শোক।
নিহত ফয়সাল মোড়ল আব্দুল আউয়াল মোড়লের ছেলে। তার বাবা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করেন এবং বড় ভাই আরমান হোসেন ডেলিভারিম্যান। মা চায়না বেগম গৃহিনী। দেশে থাকাকালীন তিনি রাজধানীর জগন্নাথপুরের বিভিন্ন মসজিদের সামনে আতর বিক্রি করতেন। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ফয়সালের পাকিস্তান যাত্রার কথা জানতেন না।
পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল ২০২৪ সালের মার্চ মাসে হিজামা সেন্টারে চাকরির জন্য দুবাই যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন। তবে কোরবানির ঈদের আগে তার সঙ্গে পরিবারের সর্বশেষ যোগাযোগ হয়, এরপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় ১৭ জন তেহরিক-ই-তালিবান সদস্য নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ফয়সাল। নিরাপত্তা বাহিনী তার পড়নের পোশাক থেকে আইডি কার্ড, টাকা ও অন্যান্য ডকুমেন্ট উদ্ধার করেছে। পরে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে নিহতদের ছবি প্রকাশিত হয়। ফয়সালের পরিবার সেই ছবি দেখে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ফয়সালের মা চায়না বেগম বলেন, “আমার ছেলে কারো খপ্পড়ে পড়ে এমন হত্যার শিকার হয়েছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।” ফয়সালের চাচা আব্দুল হালিম বলেন, “আমরা দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফেরানোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া তাকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করানোর পেছনের চক্রের বিচারও চাই।”
স্থানীয়দের ধারণা, ঢাকায় আতর বিক্রির টাকায় চলত ফয়সালের পরিবার। সম্ভবত ঢাকায় কোনো চক্রের সঙ্গে মিশে পাকিস্তানে যান ফয়সাল এবং পরে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেন।
ফয়সালের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার ও স্থানীয়রা দ্রুত বিচার ও মরদেহ ফেরতের দাবি জানাচ্ছেন।
সুত্রঃ জনকন্ঠ