নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীসহ কয়েকজনকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার মঙ্গলকোটা গ্রামের বাসিন্দারা।
সম্প্রতি মঙ্গলকোঠা নামক স্থানে একটি ময়লার ডাষ্টবিন নির্মাণের পরিকল্পনা করে উপজেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরের দিকে ওই খাস সম্পত্তিতে ডাস্টবিন নির্মাণে যায় তারা। তবে, আশপাশের লোকজন দুর্গন্ধ ছড়ানোর অভিযোগে তাতে বাধা দেয়। কিছুক্ষন পর এসব নিয়ে শুরু হয় বাকবিতণ্ড। উত্তেজিত হয়ে ওঠে দু’পক্ষই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাকবিতণ্ডের এক পর্যায়ে ওই গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা নারী মিতু ও তার স্বামী কুদ্দুসকে মারপিট করে ইউএনও। পরে মিতুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন মিতু জানান, ওই যায়গা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। যেহেতু তাদের বাড়ি সংলগ্ন তাই তারা দাবি জানিয়েছিলেন ডাস্টবিনের পরিবর্তে ভিন্ন কিছু নির্মাণের। কিন্তু ইউএনও হঠাৎই রেগে গিয়ে তার গায়ে হাত তোলেন। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে সীমানা নির্ধারণী লাল পতাকা দিয়ে পিটতে থাকেন। তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানে বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী কুদ্দুস এসব মোবাইলে ধারণ করতে গেলে তাকেও মারধর ও হুমকি দেয়া হয়। এরপরই উত্তেজিত জনতা ও কিছু দলীয় নেতাকর্মী ইউএনওর অপসারণ দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান জানান, খাস সম্পত্তিতে জনস্বার্থে ডাস্টবিন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেখানে গেলে স্থানীয় কয়েকজন মারমুখী হয়ে ওঠে। এরপর তারাই উল্টো অভিযোগ করে ইউএনও তাদের মারপিট করেছে। কিন্তু এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। স্থানীয় কিছু লোকজন বিক্ষোভ করেছিল। তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, আজ সকালে নওগাঁ জেলার ধামইর হাট পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা একটি পতিত খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে কয়েকজন ব্যক্তি ময়লা ফেলতে বাঁধা দেয় ও পরিছন্নতা কর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনা প্রশাসক হিসেবে ইউএনওকে জানালে পৌরসভার স্টাফ ও আনসারসহ ইউএনও ঘটনাস্থলে যান। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার মহিলা ও পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে এবং এক পর্যায়ে ২/১ এক জন লেবার ও আনসারদের গায়ে হাত তোলে।
এসময় সবাইকে শান্ত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেখান থেকে চলে আসলে দুই এক জন স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি যারা উক্ত খাস জমির অবৈধ দখলদার, তারা কিছু মহিলাসহ উপজেলা পরিষদের গেটে ইউ এন ও এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। উক্ত মানববন্ধনে ইউএনও কর্তৃক মহিলার গায়ে আঘাত করা হয়েছে মর্মে মিথ্যা অভিযোগ এনে।
পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সুত্রঃ যমুনা টিভি