আজ ২০ নভেম্বর ‘মাই ডে, মাই রাইটস’ অর্থাৎ ‘আমার দিন, আমার অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশু দিবস। গত ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মালটিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে ২০২৫-এর ফলাফলে দেখা যায়, দেশের ৮৬ শতাংশ শিশু কোনো না কোনো ধরনের সহিংস আচরণের শিকার। সমীক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, এই শিশুদের বেশিরভাগই বাড়িতে বাবা-মা, নিকট আত্মীয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক এবং প্রতিবেশীদের দ্বারা বৈরী আচরণের শিকার হয়।
কিছু পরিসংখ্যান:মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র আসকের তথ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালে (জানুয়ারি-অক্টোবর) ১০ মাসে ৯০৫ জন শিশু নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। ২০২৪ সালের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) যা ছিল ৫৮০ শিশু। আবার ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৯২০ জন। ২০২৫ সালে বাড়িতে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ১৮টি, শিক্ষকদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয় ৮১ জন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় ৯৯ জন। পাঁচ বছরের নিচে নির্যাতনের শিকার হন ১০৬ জন। ২০২৫ সালে ৩৫৯ শিশুকে নানা কারণে হত্যা করা হয়। ২০২৪ সালে যা ছিল ৪৮২ জন। ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৪২১ জন।
অভিভাবক ও শিশুদের কথা :বাবা-মা পড়াশোনার জন্য বকাঝকা করেন, মোবাইল ফোনে গেমস খেলার জন্য রাগারাগি করেন, বেশিরভাগ শিশুদের এটি সাধারণ অভিযোগ। এতে তাদের মন খারাপ হয় বলেও জানায় শিশুরা। এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘বাচ্চাকে পড়ার জন্য আমিই বকি, বাবাকে বকতে দেই না, কারণ বাবা খুব বেশি রেগে যান, মারও দিয়ে দেন।’ ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্সের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা বলেন, “এই সময়ে আমরা ‘গুড প্যারেনটিং’-এর অভাব প্রকটভাবে অনুভব করছি। আগে শিশুদের বকা-ঝকা করলে তারা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে শেয়ার করতে পারত। শিশুদের শাস্তি দেওয়া হলে তাদের কাছে আশ্রয় পেত, কিন্তু এখন অনেক পরিবারেই এই আশ্রয়টা নেই, ফলে এমন পরিস্থিতিতে শিশুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
