গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় ১৪ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষককে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। এতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার সহযোগী আরেক নারী শিক্ষক। ওই মাদ্রাসাছাত্রী মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গা আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসার পঞ্চম জামাতের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি মুকসুদপুর উপজেলার একটি গ্রামে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার (৫১) ও শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে (৩০) আসামি করে মুকসুদপুর থানায় এ মামলা করেন।
মামলা দায়েরের পর শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে, বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদারকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর থেকে ওই শিক্ষক পুলিশ পাহারায় মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে তাকে মুকসুদপুর থানায় জিঞ্জাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রী আত্মহত্যা করে। এর আগে, গত ২৬ নভেম্বর মাদ্রাসা ছুটির পর শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং এর চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক ও এই মামলার অপর আসামি খাদিজা বেগম। এই বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, ‘ঘটনার পর আমার মেয়ে বাড়িতে এসেবিষয়টি আমাদের জানায়। এরপর থেকে আমার মেয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। লোকলজ্জায় আমরা বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, ওই শিক্ষক তার সহযোগি শিক্ষিকার মাধ্যমে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এ কারণে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
এ বিষয়ে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সুত্র: আমাদের সময়
