এটা কি শুনছি , আমার কান কে বিশ্বাস করতে পারছি না, একটা নিসংসহ হত্যার কলংক, আগুনের পুরো যাওয়া বাতাসে নুসরাতের মাংসের পোরা গন্ধ এখনো রয়ে আছে পুরো দেশে ।
ঠিক তখনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুনেছি মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। ধর্ষণের পর তার মাথার পেছনে প্রচণ্ডভাবে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। মাথার খুলির পেছনের অংশ দুই ভাগ হয়ে গেছে। মাথার ভেতর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এমন আঘাতের পর সঙ্গে সঙ্গে মারা যাওয়ার কথা। যদি সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু নিশ্চিত না হয় তবে সর্বোচ্চ ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে।’
এই ত্রিশ চল্লিশ মিনিট যদি বেঁচে থেকে থাকে তখন তানিয়া কী করেছিলো? সে ছিলো নার্স। সেবিকা। কতো মানুষের সেবা করেছে হয়তো। সে কী ভাবছিলো তার কী দোষ ছিলো? নাকি ভাবছিলো এইসব মানুষদের জন্যই তো সে সেবার পেশা বেছে নিয়েছিলো।
ভেবেছিলো মানুষের সেবা করবে।
তবে এরা কারা? এরা কি মানুষ না?
তানিয়া বাড়ি যাচ্ছিলো। ভাই তুলে দিয়েছে বাসে। সাথে একটা টিভিও কিনে দিয়েছে। বাবা মা-মরা নিজের পায়ে দাঁড়ানো প্রতিষ্ঠিত মেয়েটির সাথে প্রথম ইফতার করবে ভেবেছিলো। তাই বিকেলে অফিস শেষে বাড়ি ফেরার বাসে চড়ে বসা।
আর বাড়ি পৌছায় নি তানিয়া।
প্রথম তারাবী চলছিলো মসজিদে মসজিদে তখন। আর বাসে চলছিলো তানিয়ার উপর পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত অপরাধ। মানবতা বিরোধী অপরাধ – ধর্ষণ!
হায় দেশ! কিভাবে ,কোথায়, কোন স্হান নিরাপদ শিশু কন্যা, নারী,কারো মা,কারো বোন। এদের কি সত্যি কোন নিরাপদ স্হান নেই ।এই নারী জাতীটা কি সত্যি কোন দিন নিরাপদে চলতে পারবে না।বাংলাদেশে যখন একেকটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তখন অনেকে শুরুতেই মেয়েটার ঠিক কী কী দোষ ছিল, তার চুলচেরা বিশ্লেষণে লেগে যান। এমনকি এই সংখ্যাও কম নয়। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে তাঁরা সেটা ব্যক্তও করে যাচ্ছেন। শুরুতেই আসে পোশাকের বিষয়টা। তারপর আসে সেই ছেলের সঙ্গে মেয়েটার প্রেম ঠিক কতখানি গভীর ছিল তার রসাল বর্ণনা। আদতে প্রেম ছিল কি না, সেটা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। আর প্রেম থাকলেই তাকে ধর্ষণ করা যায় এমনকি সেই ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর যদি মেয়েটা শিশু হয়, তখন অবশ্য তাঁরা চুপ করে যান। কিন্তু তখন শুরু হয় মিডিয়ার ওপর আক্রমণ। মিডিয়ার মেয়েদের কুৎসিত পোশাক–আশাক দেখে উত্তেজিত হয়ে এমন কাজ করেছে মর্মে সাফাই গাওয়া শুরু হয়। শুধু সাফাই গেয়েই শেষ হয় না। তখন মিডিয়ার মেয়েদের পোশাকের বিভিন্ন দিকের রসাল বর্ণনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
কোন কারণটা একজন ধর্ষককে দায়মুক্তি দেয়? এবার আসি একটু বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে। বহির্বিশ্বের মেয়েদের পোশাক আমাদের ভাষায় আসলেই অদ্ভুত ও ভয়ংকর রকমের খাটো। কিন্তু সেসব দেশে ধর্ষণ কেন হয় না? অস্ট্রেলিয়াতে দেখেছি এখানে মানুষ প্রচণ্ড শীতেও অনেক কম কাপড়চোপড় পরে। কারণ, তারা এমন আবহাওয়াতেই ছোটবেলা থেকে বড় হয়। তাই তাদের কাছে ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে যায়। আর পোশাকের ব্যাপারটাতে প্রাধান্য পায় স্বাচ্ছন্দ্য। ফ্যাশনের বিষয়টা তাই দেখা যায়, তাদের পোশাকে বাহুল্য একেবারেই নেই। জিনসের প্যান্টের বিভিন্ন জায়গায় ছেঁড়া। গায়ের পোশাকও অনেক বেশি খাটো। কারণ, বেশি কাপড় পরলে সেটা নিয়ে চলাফেরা করা যেমন অসুবিধা, তেমনি পরিষ্কার করতেও অনেক ঝক্কি। কৈ তারা তো কথায় কথায় ধষন হয় না । তার মানে এই না, আপনি অনেক বেশী ছোট কাপড় পরলে ধষন থেকে মুত্তি পাবে। তাহলে কি অপরাধ ছিল নুসরাতের যে কিনা মাদ্রাসার মত জায়গায় পুরো শরীর কাপর দিয়ে ঢেকে রাখতো ।মানুষ নামে জানোয়ার গুলে তো তাকে রেহাই দেই নাই।হুজুর মানে ভন্ড গুলো দেশে আনাছে কোনাচে ভরে আছে আর মানুষ নামে জন্তু জানোয়ার গুলো তে আপনার আমার আশেপাশেই। যতদিন না এগুলোকে লালন পালন বন্ধ করবে ততদিন হাজারও নুসরাত এবাবে হারাবে।আর দাঁত বের করে হাসবে ঐই নরপিচাস গুলো । সৃষ্টিকতা আমাদের আলাদা শারীরিক গঠন দিয়ে বানালেও আলাদা করেনি মোটে ও। তাহলে কেন নারী কেন কোন জায়গায় নিরাপদ নয়। আজ আমি নারী হয়ে বলতে ইচ্ছে করে নারী তুমি হও না কারো মা দিও না জন্ম পুএ সন্তান। করো না দূষিত বাতাস।